লখনউয়ে গিয়ে ঋষভ পন্তদের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। তবে রবিবার (২৬ এপ্রিল) ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়েতে বদলা পূরণ করলেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। আইপিএল ২০২৫-এর ৪৫তম ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৫৪ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবলেও বড় লাফ দিল মুম্বইয়ের দল। তারা দুইয়ে উঠে এসেছে। যদিও এদিন ডাবল হেডারের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং দিল্লি ক্যাপিটালস। এই ম্যাচ যে দল জিতবে, তারা পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে উঠে আসবে। তখন তিনে নেমে যাবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তাতেও অবশ্য উত্থানের গ্রাফটা উর্ধ্বমুখীই থাকবে এমআই-এর।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৭ উইকেটে ২১৫ রান করেছিল। সেই রান তাড়া করতে নেমে নির্দিষ্ট ২০ ওভার খেললেও, লখনউ ১৬১ রানে অলআউট হয়ে যায়। ৫৪ রানে বড় জয় ছিনিয়ে নেয় হার্দিকের মুম্বই।
রিকেলটন আর সূর্যের হাফসেঞ্চুরিতে দ্বিশতরান মুম্বইয়ের
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামলে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই রোহিত শর্মার (৫ বলে ১২) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু হিটম্যানের অভাব এদিন পূর্ণ করে দেন রায়ান রিকেলটন। মূলত দুই ব্যাটারের হাফসেঞ্চুরির উপর নির্ভর করেই বড় রানের স্কোর করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ওপেনিংয়ে রায়ান রিকেলটন, আর মিডল অর্ডারে সূর্যকুমার যাদব- দুই ব্যাটারের দৌলতে রবিবার লখনউয়ের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করে মুম্বই।
চোট সারিয়ে এই ম্যাচে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের ময়াঙ্ক যাদব। আর প্রত্যাবর্তনের মঞ্চেই ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন ময়াঙ্ক। যদিও তাতে মুম্বইয়ের রানের গতি আটকানো যায়নি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ময়াঙ্কের বলে পর পর দু'টি ছয় মারেন রোহিত শর্মা। তবে সেই ওভারের পঞ্চম বলেই ময়াঙ্ক ফেরান রোহিতকে। আগের দু'টি ম্যাচে অর্ধশতরান করলেও, এ দিন নিরাশ করেন রোহিত। তবে রোহিত আউট হলেও, রিকেলটন মুম্বইয়ের রানের গতি কমতে দেননি। আইপিএল যত এগোচ্ছে, ততই ফর্মে ফিরছেন প্রোটিয়া তারকা। এ দিন দিগ্বেশ রাঠির একটি ওভারে নেন ১৯ রান। তবে সেই দিগ্বেশই আউট করেন রিকেলটনকে। চারটি ছক্কা এবং ছ'টি চারের সৌজন্যে ৩২ বলে ৫৮ করে সাজঘরে ফেরেন রিকেলটন।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনারা অদক্ষ, অকর্মণ্য… পাহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের নাম জড়াতেই পালটা তোপ আফ্রিদির
রায়ান রিকেলটন আউট হলে চারে নামেন সূর্যকুমার যাদব। ক্রিজে ছিলেন উইল জ্যাকস। তাঁরা দু'জনেই চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। ময়াঙ্কের একটি ওভারে তো ১৬ রান ওঠে। কিন্তু একটি ছক্কা এবং তিনটি চারের হাত ধরে ২১ বলে ২৯ করে আউট হন উইল জ্যাকস। এদিকে এদিন নিরাশ করেছেন তিলক বর্মা। মাত্র ৫ বলই খেলতে পেরেছেন তিনি। করেছেন মাত্র ৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়াও ব্যর্থ হন। তাঁকেও ফিরিয়েছেন ময়াঙ্ক যাদবই। ৭ বলে ৫ রান করে বোল্ড হন হার্দিক। তবে সূর্যকুমার যাদব কিন্তু নিজের চেনা ছন্দে ছিলেন। লখনউয়ের কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি তিনি। কিন্তু আবেশ খানকে ছয় মেরে অর্ধশতরান করার পরেই আউট হন সূর্য। ২৮ বলে ৫৪ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলেন তিনি। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি করে চার এবং ছয়।
এছাড়া নমন ধীরের ১১ বলে অপরাজিত ২৫ রান, করবিন বশের ১০ বলে ২০ রানের হাত ধরে ২০০ রানের গণ্ডি টপকে বড় স্কোর করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। লখনউয়ের হয়ে ময়াঙ্ক যাদব এবং আবেশ খান নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
বুমরাহের আগুনে পারফরম্যান্স, মুখ থুবড়ে পড়ল লখনউ
২১৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড় করছিল লখনউ সুপার জায়ান্টসের ব্যাটাররা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই এডেন মার্করামকে ফেরান জসপ্রীত বুমরাহ। এদিন আশা জাগিয়েও হতাশ করেন নিকোলাস পুরানও। ১৫ বলে ২৭ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৩টি ছক্কা এবং ১টি চার দিয়ে সবে হাত খুলে মারতে শুরু করেছিলেন পুরান। কিন্তু শুরুতেই তাঁকে থামিয়ে দেন উইল জ্যাকস। একই ওভারে ঋষভ পন্তকেও ফেরান উইল জ্যাকস। ২ বলে ৪ করে ফের একরাশ হতাশাকে সঙ্গী করে সাজঘরে ফেরেন পন্ত। এই সপ্তম ওভারে বল করতে এসেই ম্যাচের রং একেবারেই বদলে দেন উইল জ্যাকস। এই ধাক্কাটাই শেষমেশ আর সামলে উঠতে পারেনি লখনউয়ের দল।
আরও পড়ুন: ৯টি ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই হার, তবু CSK-এর বিরুদ্ধে জিততেই SRH-কেপাঠানো হল মলদ্বীপে- ভিডিয়ো