বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি হারের পরে ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দিকে নজর ঘোরানোর আগে ভারতীয় ক্রিকেটমহলের অন্যতম প্রধান আলোচনার বিষয় অবশ্যই টিম ইন্ডিয়ার দুই সিনিয়র তারকা বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার ভবিষ্যৎ। সিডনি টেস্টের সময়েই ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্পষ্ট করে দেন যে, সিডনি টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ানো দীর্ঘতম ফর্ম্যাট থেকে তাঁর অবসরের ইঙ্গিত দেয় না। কিন্তু তাঁর ভাইরাল হওয়া মন্তব্যটি বিসিসিআই কর্তারা কানে তুলছেন না বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার বিসিসিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দেবজিৎ সাইকিয়া বোর্ড সচিবের ভূমিকা গ্রহণ করবেন এই সভায়। অস্ট্রেলিয়ায় হতাশাজনক পারফর্ম্যান্সের পরে রোহিতের টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হতে পারে এই সভায়।
৩৭ বছর বয়সী রোহিত সদ্য সমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সফরের পাঁচ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩১ রান সংগ্রহ করেন। ব্যাটিং গড় মাত্র ৬.২, যা অস্ট্রেলিয়ায় সফরকারী কোনও অধিনায়কের সবচেয়ে খারাপ গড় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। এমনটা নয় যে, শুধু অস্ট্রেলিয়া সফরেই ব্যাট সহাতে ব্যর্থ হয়েছেন রোহিত। বরং ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২টি টেস্টের চারটি ইনিংসে ব্যাট করে হিটম্যান সংগ্রহ করেন ৬, ৫, ২৩ ও ৮ রান। পরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন টেস্টের ৬টি ইনিংসে ব্যাট করে রোহিত সংগ্রহ করেন যথাক্রমে ২, ৫২, ০, ৮, ১৮ ও ১১ রান।
ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পরে রোহিত সিডনি টেস্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সিডনিতে মাঠে না নামায় ভারত অধিনায়ক তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলেছেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় দিনে স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষৎকারে রোহিত স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি এখনই টেস্ট খেলা ছাড়ছেন না।
তবে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, সাইকিয়া যেহেতু সিরিজ পর্যালোচনার জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকরের সঙ্গে বসতে চলেছেন, তাই বোর্ড কর্তাদের ইঙ্গিত, অবসর প্রসঙ্গে একেবারে নিশ্চিত হওয়া উচিত নয় রোহিতের।
'শেষ রাস্তা খুঁজছিলেন রোহিত'
সিডনি টেস্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্টে ভারতের হয়ে ছয় নম্বরে ব্যাট করেন রোহিত। তবে খারাপ ফর্ম কাটাতে মেলবোর্নে ওপেন করতে নামেন তিনি। যার ফলে কেএল রাহুলকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে হয়েছিল এবং শুভমন গিলকে প্রথম একাদশ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে বক্সিং ডে টেস্টে জোড়া ব্যর্থতার পরে রোহিত প্লেয়িং ইলেভেন থেকে সরে এসে ফর্মে থাকা ব্যাটারদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি আগরকরের উপর নির্ভর করা বিসিসিআইয়ের ধারণা, রোহিত কেবল ডব্লিউটিসি ফাইনালে যোগ্যতা অর্জনের জন্যই মরিয়া হয়ে শেষ সমাধান খুঁজছিলেন। সেই কারণেই নিজেকে সরিয়ে নেন সিডনি টেস্ট থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিত চেষ্টা করছিলেন যাতে ভারত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দৌড়ে টিকে থাকে। এখন এটা তাঁর নিতান্ত ব্যক্তিগত বিষয় যে তিনি জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন কিনা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে অজিত আগরকর ও তাঁর নির্বাচক কমিটির উপর।’