মহম্মদ সিরাজের তখনও একটি ওভার বাকি ছিল। শিবম দুবে, যিনি ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী দলের অংশ ছিলেন, তিনি একটি ওভারও বল করেননি। সেই পরিস্থিতিতে সকলকে চমকে দিয়ে ১৯তম ওভারের জন্য রিঙ্কু সিংয়ের হাতে বল তুলে দেন সূর্যকুমার যাদব। ১৮তম ওভারেই খলিল আহমেদ ১২ রান দিয়েছিলেন। এর ফলে জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে ৯ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। সেই সময়ে রিঙ্কুকে বল দেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিসঙ্গত?
এই প্রশ্নে যখন তোলপাড় ক্রিকেট মহল, তখন কামাল করলেন রিঙ্কু। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে রান হয়নি। দ্বিতীয় বলে কুশল পেরেরাকে (৩৪ বলে ৪৬) ফেরান রিঙ্কু। পরের তিন বলে যথাক্রমে রান হয় ১, ২, ০। শেষ বলে রমেশ মেন্ডিসকে (৬ বলে ৩ রান) আউট করেন তিনি। অর্থাৎ মাত্র ৩ রান দিয়ে তিনি ২ উইকেট তুলে নেন। রিঙ্কু কিন্তু এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল করলেন। এটিই তাঁর ম্যাচের প্রথম ওভার ছিল।
এর পর ২০ ওভারে সূর্য নিজে বলের দায়িত্ব তুলে নেন। শেষ ৬ বলে ৬ রান করলেই শ্রীলঙ্কা জিতে যেত। সূর্য বল করতে এসে প্রথম বলে রান দেননি। দ্বিতীয় বলে আউট করেন কামিন্দু মেন্ডিসকে (৩ বলে ১ রান)। তৃতীয় বলে গোল্ডেন ডাকে ফেরান মাহিশ থিকশানাক। পরের তিন বলে তিনি পাঁচ রান দেন। যার ফলে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। সূর্য সম্ভবত এই ঝুঁকি নিয়েছিলেন, যেহেতু ভারত আগের দুই ম্যাচে জিতে সিরিজ পকেটে পুড়ে ফেলেছিল।
পাশাপাশি হয়তো স্কাই ফাটকা খেলতেও চেয়েছিলেন? যেটা কাজে লেগেছে। ম্যাচের পর সূর্য সনি স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলার সময়ে রিঙ্কুকে দিয়ে বল করানোর বিষয় নিয়ে দাবি করেন, ‘২০তম ওভারের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা তাও সহজ ছিল। তবে ১৯তম ওভারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন ছিল। সিরাজ এবং আরও কয়েক জনের ওভার বাকি ছিল। কিন্তু আমি অনুভব করেছি, রিংকু সেই উইকেটের জন্য আরও উপযুক্ত ছিল। কারণ আমি ওকে বোলিং করতে দেখেছি এবং আমি ওকে নেটে প্রচুর অনুশীলন করিয়েছি। আমি অনুভব করেছি যে, এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল এবং সেই কারণেই আমি সেই কলটি নিয়েছিলাম।’
কেন সূর্যকুমার নিজে ১৯তম ওভার বল করেননি, এই বিষয়ে আশিস নেহরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলে, ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘আমি জানতাম ১৯তম ওভার ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য সব সময়েই কঠিন ছিল (হাসি)। তাই রিঙ্কুকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। একজন ডানহাতি বোলিং একজন বাঁ-হাতি ব্যাটারের জন্য সব সময়েই কঠিন। এটি দুর্দান্ত বিষয় যে, ও ওর দক্ষতার সর্বোত্তম ব্যবহার করেছে এবং আমার কাজকে সহজ করে দিয়েছে। এখন আমার হাতে কিন্তু আরও একটি বোলিং বিকল্প রয়েছে।’
এই ম্যাচে বোলার সূর্যকুমার যাদবের কৃতিত্বও অস্বীকার করার নয়। তিনি ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলতে পরিচিত। কিন্তু মঙ্গলবার পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারত অধিনায়ক তাঁর হাত ঘুরিয়ে ম্যাচটিকে সুপার ওভারে নিয়ে গিয়েছিলেন। স্বভাবতই ম্যাচটি অন্য মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করে ভারত।