বিসিসিআই-এর বারবার নির্দেশ সত্ত্বেও রঞ্জি ট্রফিতে খেলেননি ইশান কিষাণ এবং শ্রেয়স আইয়ার। ইশান তো রঞ্জি না খেলে আইপিএলের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। প্রথমে ইশান এবং তার পর শ্রেয়স ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেট খেলার সরাসরি নির্দেশ উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। কিষান ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেননি। শ্রেয়স আবার মুম্বই ক্রিকেট সংস্থাকে জানিয়ে দেন, তাঁর পিঠে চোট রয়েছে। তবে শ্রেয়সের এই দাবি খারিজ করেছেন এনসিএ-র স্পোর্টস সায়েন্স এবং মেডিসিন বিবাগের প্রধান নীতিন প্যাটেল। নীতিন প্যাটেলের দাবি, শ্রেয়স আইয়ারের নতুন কোনও চোট নেই। এবং তিনি খেলার জন্য ফিট ছিলেন।
ইশান কিষান গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোম সিরিজের পর থেকে কোনও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেনি। শ্রেয়স আইয়ার আবার ফিট থাকা সত্ত্বেও কম স্কোর করার কারণে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন। বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ সমস্ত অ্যাসোসিয়েশন এবং বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেট খেলার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি অফিসিয়াল চিঠিও পাঠান। তার পরেও কোনও হেলদোল দেখাননি ইশান, শ্রেয়সরা। যেটা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিসিসিআই এখন টেস্ট ক্রিকেটারদের পুরস্কৃত করার জন্য একটি সংশোধিত বেতন কাঠামো নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নতুন বেতন কাঠামো কেমন হবে?
রিপোর্টে যোগ করা হয়েছে যে, ইশান কিষান ‘ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার জন্য টিম ম্যানেজমেন্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে এবং তার পরিবর্তে আগামী মাসে শুরু হওয়া আইপিএলের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
বর্তমান বেতন কাঠামোর অধীনে, একজন ভারতীয় ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক টেস্টের জন্য ম্যাচ ফি হিসেবে ভারতীয় মুদ্রায় ১৫ লাখ টাকা করে পান। ওয়ানডে-তে তারা প্রতি ম্যাচে ৬ লাখ করে পান। আর প্রতিটা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির জন্য ৩ লাখ করে পেয়ে থাকেন। কিন্তু নিয়মিত টেস্ট খেলা প্লেয়ারদের জন্য বোনাসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবং পারিশ্রমিক মডেলের পরিবর্তন হতে পারে বলে খবর।
আরও পড়ুন: যাদের টেস্ট খেলার খিদে নেই… জুরেল সহ তরুণদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও, ঘুরিয়ে ইশানদের ঠুকলেন রোহিত
নতুন বেতন কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত এক সূত্র দাবি করেছেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ এক ক্যালেন্ডার বছরে সমস্ত টেস্ট সিরিজ খেলে, সেই প্লেয়ারকে বার্ষিক রিটেইনার চুক্তি ছাড়াও অতিরিক্ত পুরস্কৃত করার ভাবনা রয়েছে। এতে খেলোয়াড়রা আরও বেশি লাল বলের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করবে। টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য এটি একটি অতিরিক্ত সুবিধা হবে।’
বোনাসটি প্রযোজ্য হবে, যদি একজন খেলোয়াড় ফিট এবং ফর্মে থেকে এক ক্যালেন্ডার বছরে ভারতের হয়ে সমস্ত টেস্ট সিরিজ খেলে তবেই। এই অতিরিক্ত অর্থ তরুণদের টি-টোয়েন্টি লিগ এবং আন্তর্জাতিকের যুগে দীর্ঘতম ফরম্যাটে সমান গুরুত্ব দিতে উৎসাহিত করবে। যদিও, কেন্দ্রীয় ভাবে চুক্তিবদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিদেশি লিগে খেলার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে আইপিএলে স্বতঃস্ফূর্ত থাকার জন্য ঘরোয়া ক্রিকেট এড়িয়ে যাওয়া, তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান ঘটনা হয়ে উঠেছে। সব ঠিকঠাক থাকলে এবং বোর্ডের অনুমোদন পেলে ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এই সংশোধিত বেতন কাঠামো ২০২৪ আইপিএলের পরে কার্যকর করা হবে।