২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের পর, পরবর্তী দুই বছরে একটি বিশৃঙ্খল রূপান্তর পর্বের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল ভারতীয় দল। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ০-৪ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর, বেশ কয়েকজন ভারতীয় অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। সেই সময় নির্বাচকরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে অধিনায়ক পদ থেকে সরানো হবে, এবং সেই কমিটির অন্যতম মুখ্য সদস্য ছিলেন প্রাক্তন অলরাউন্ডার মোহিন্দর অমরনাথ। সম্প্রতি সেই পর্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন যুবরাজ সিং-এর বাবা যোগরাজ সিং। তিনি কড়া ভাষায় অমরনাথ ও তাঁর সহ-নির্বাচকদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছেন।
InsideSport-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যোগরাজ সিং বলেন, ‘তোমরা (বিসিসিআই নির্বাচকরা) কোনও কারণ ছাড়াই ছেলেগুলোর ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছিলে। গৌতম গম্ভীর, যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, জাহির খান, মহম্মদ কাইফ, ভিভিএস লক্ষ্মণ, রাহুল দ্রাবিড় — এই ছেলেগুলোকে ২০১১ সালের পরেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা বিশ্বকাপ জয়ের পর পুরো দলটাই ভেঙে দিলে। সাতজন প্লেয়ারের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণেই আমরা তখন ধুঁকছিলাম।’ ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই লজ্জার পরাজয়ের পর গম্ভীর, যুবি, জাহির ও হরভজনকে ধীরে ধীরে বাদ দেওয়া হয়। অন্যদিকে, দ্রাবিড় ও লক্ষ্মণ নিজেরাই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।
২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়েও গম্ভীর, যুবরাজ, জাহির এবং হরভজন—এই চারজনই ২০১৫ বিশ্বকাপের আগেই একেবারে দলের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। তৎকালীন নির্বাচক মোহিন্দর অমরনাথকে তীব্র ভাষায় দোষারোপ করে যোগরাজ বলেন, ‘ধোনির অধিনায়কত্বে আমরা পাঁচটা সিরিজ হারি। তখন ওকে সরানোর কথা হয়েছিল, আর অমরনাথকেই অধিনায়ক বদলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে এটা করা হয়েছিল, সেটা সঠিক ছিল না।’
অমরনাথ এর আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় হারের পর ধোনিকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আটকে দেন তৎকালীন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট এন. শ্রীনিবাসন।
২০১২ সালে CNN-IBN-কে অমরনাথ বলেছিলেন, ‘যখন আপনি কাউকে সম্মান করেন, তখন আপনি প্রশ্ন করেন না। কিন্তু আমার প্রশ্ন, যদি নির্বাচক কমিটি ভারতীয় ক্রিকেটের ভালোর কথা ভেবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয় না কেন?’
প্রায় এক বছরই ছিল অমরনাথের নির্বাচক হিসেবে মেয়াদ। শেষ পর্যন্ত ধোনিই টেস্টে ২০১৪ সালের শেষ অবধি অধিনায়ক থাকেন এবং এরপর তিনি দীর্ঘ ফর্ম্যাট থেকে অবসর নেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনি ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত অধিনায়কত্ব করেন, এরপর সেই দায়িত্ব নেন বিরাট কোহলি।