কদিন আগেই মিমি চক্রবর্তীর ঠোঁট নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করে বসেছিলেন পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, মিমির ওয়েবসিরিজ খারাপ লাগায়, তা ‘যাত্রাপালার’ সঙ্গে তুলনা করে জড়িয়েছিলেন বিতর্কে। এবার সেই পরমাই দাবি তুললেন, কলকাতা নাকি ‘ডাউনমার্কেট’ হয়ে গিয়েছে, তাই এখন অন্য রাজ্যে পাড়ি দিতে চান তিনি।
বাংলা গেম শো রোজগেরে গিন্নির উপস্থাপিকা হিসেবে ঘরে ঘরে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছিলেন পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ভূতের ভবিষ্যৎ, এলার চার অধ্যায়ের মতো বেশ কিছু ছবির জন্য করেছেন প্লেব্যাকও। পরমা সোমবার ফেসবুকে লিখলেন, ‘কলকাতা যে কোনোদিন এরকম পাতি, ডাউনমার্কেট হয়ে যাবে, বিশ্বাস করুন, ছোটবেলায় আন্দাজ করতে পারিনি। তাহলে সেই কোন বাচ্চাবেলায় বিদেশে পাড়ি দিতাম! সুযোগ ছিল বিস্তর! আজকাল দেখি রাত ৮টার পর গড়িয়াহাটের অর্ধেক দোকানের আলো নিভে গিয়েছে। বালিগঞ্জ ফ্লাইওভার থেকে ঢাকুরিয়ার মোড় পর্যন্ত বাড়িগুলোর মাথায় 24/7 ইয়া বড় বড় সাইনবোর্ড ঝলমল করত সারা রাত, পানের দোকানগুলো তো রাত ১২টা-১টা অবধি খোলা থাকত, চায়ের দোকান অন্তত রাত ১১টা! গড়িয়াহাটের জামাকাপড়ের দোকান সাড়ে নটা-১০টা। এখন শুধু অন্ধকার দেখা যায়। ট্র্যাফিকের কিছু মামু মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, বড় মাছ জালে পড়বে এই আশায়। মাসের শেষে, এবং উইকএন্ডে এরা অতি সক্রিয় থাকেন। এছাড়া রাত ৮টা-৯টার পর গড়িয়াহাট/গোলপার্কফাঁকা হয়ে যায়, অন্ধকার হয়ে যায়। খালি সাইনবোর্ড গুলো বাড়ির ছাদে দাঁত বের করে কঙ্কাল এর মত হাসে। অথচ কয়েক বছর আগেও, এদের রাতকে দিন করা আলোর ঝলকানিতে আমাদের বেডরুমে তিন লেয়ারে পর্দা দিতে হত!’
পরমা আরও লেখেন, ‘শুধু মাত্র কলকাতাকে ভালবেসে এই দেশে, এই শহরে থেকে গেলাম!আজকের এই পাতি, পচে যাওয়া কলকাতা টাকে দেখতে হবে বলে! প্রত্যেকদিন মনে হয় জানেন, পাততাড়ি গুটিয়ে অন্য কোনো রাজ্যে রি-লোকেট করি। এখানে আর থাকা যাচ্ছে না।ছেড়ে কলকেতা বন হব পগার পার…’
দেখা গেল, নেটপাড়ার বড় একটা অংশ ভীষণভাবে সহমত পোষণ করেছেন পরমার সঙ্গে। একজন লেখেন, ‘এটা এখন এভারেজ ভদ্রত্ব বাঙালির মনের কথা। আমাদের না বাঙালি হিসেবে ভারতবর্ষে একটু নাক উঁচু ব্যাপার ছিল নিজের কালচার এবং এই শহর কলকাতাকে নিয়ে, মাটিতে মিশে যাচ্ছে যা দিনদিন।’ আরেকজন লিখলেন, ‘শুনতে খারাপ লাগলেও, খুব রাগ হলেও জানি এটা বাস্তব। শুধু মেনে নিতে পারি না।’
আরেকজন লিখলেন, ‘এই গড়িয়াহাট ৮টায় বন্ধ হয়ে যাওয়াটা, আমাকেও খুব অবাক করে। খুব চটপট টাইম মেপে কাজ না সারলেই দেখি দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর তারপর তেমন কোনো রাস্তার পাশের খাবার দোকানে খাবারও পাওয়া যায় না, যদি না কোনো রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়। আর রাত ৯টা বাজলে বাস তো পাওয়াই যায় না।’