টেস্ট ক্রিকেটে এবার টু-টায়ার সিস্টেম চালু করার কথা ভাবছে ICC। একটি মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছেন ICC-র নতুন চেয়ারম্যান জয় শাহ। নতুন এই সিস্টেম কার্যকর হলে ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ক্যালেন্ডার বছরে আরও বেশি টেস্ট খেলবে নিজেদের মধ্যে। জানা যাচ্ছে, সদ্য সমাপ্ত বর্ডার গাভাসকর ট্রফির টেস্টে রেকর্ড দর্শক সংখ্যা দেখার পর এই বিষয়ে সদর্থক ভূমিকা নেন শাহ। এবারের BGT-তে রেকর্ড দর্শক সমাগম হয়েছিল। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে মোট ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার ৮৭৯ জন দর্শক হয়েছিল, যা যেকোনও নন অ্যাশেজ সিরিজের মধ্যে সর্বাধিক।
চালু হবে টু টায়ার টেস্ট ক্রিকেট সিস্টেম?
টু টায়ার সিস্টেম চালু হলে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বিশ্ব ক্রিকেটের প্রথম সারির দলগুলি নিজেদের মধ্যে আরও বেশি ম্যাচ খেলবে, ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং জিম্বাবোয়ের মতো দল, যারা টেস্ট খেলার জন্য অত বেশি পরিচিত নয়, তাদের দ্বিতীয় সারিতে রাখা হবে। সম্ভাবনা রয়েছে দ্বিতীয় সারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং বাংলাদেশের থাকার। কারণ সাম্প্রতিক কালে টেস্টে খুব বেশি সাফল্য পায়নি এই দুই দেশ। যদিও দলগুলির কাছে উত্তীর্ণ হওয়ার বা অবনমনে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে কিনা সেই বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট হয়নি।
আগেও উঠেছিল দাবি, খারিজ করেছিল BCCI:
তবে টু টায়ার সিস্টেম নতুন কিছু নয়। এর আগে ২০১৬ সালে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিল ICC। তবে তখন ছোট দলগুলির তরফে বিরোধিতা করা হয়েছিল, যেই কারণে তা খারিজ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন BCCI-এর সভাপতি অনুরাগ ঠাকুর। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘BCCI দ্বি-স্তরীয় টেস্ট পদ্ধতির বিরুদ্ধে, কারণ এর ফলে সমস্যায় পড়বে ছোট দেশগুলি। BCCI সব সময় তাদের পাশে রয়েছে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ছোট দলগুলির স্বার্থ দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দ্বি-স্তরীয় পদ্ধতিতে তাদের ক্ষতি বেশি। যার মধ্যে মুনাফা এবং বড় দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগের বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে। আমরা চাই না বিষয়টি কার্যকর করা হোক। আমরা বিশ্ব ক্রিকেটের উন্নতি চাই। সেই কারণে আমরা সব দলের বিরুদ্ধে খেলার পক্ষপাতী।’
তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে মত পাল্টেছে ভারতের। সম্প্রতি বর্ডার গাভাসকর ট্রফি চলাকালীন এই বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রী। তিনি টু টায়ার সিস্টেমের পক্ষে সওয়াল করে বলেছিলেন, ‘এটা ICC-র কাছেও একটা মনে করিয়ে দেওয়ার বার্তা যে টেস্ট ক্রিকেট তখনই রক্ষা পাবে, যখন বিশ্বের সেরা দলগুলো খেলবে, নাহলে অনেক কিছুই করতে হবে ICC-কে এই ফরম্যাটের উন্নতি করতে।’
কেমন হবে টু টায়ার সিস্টেম:
টায়ার ওয়ানে থাকবে- ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান।
টায়ার টু-তে থাকবে- ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং জিম্বাবোয়ে।