সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানে ঠিক কী লেখা হয়েছে?
বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন সেই প্রসঙ্গে আপনাকে লিখছি। মনে হচ্ছে গঙ্গা ও তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে আপনাদের মধ্য়ে। কিন্তু রাজ্য় সরকারকে না জানিয়ে এই ধরনের আলোচনা প্রত্যাশিত নয়, ও সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
‘আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভৌগলিকগতভাবে এই সম্পর্ক। সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও এই সম্পর্ক। আমি বাংলাদেশের মানুষকে শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি।’ এরপর ছিটমহল বিনিময় চুক্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এরপর তিনি লিখেছেন ‘জল অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এটা মানুষের লাইফলাইন। এই সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আমরা আপোস করতে পারি না। এই ধরনের চুক্তি হলে বাংলার মানুষ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ’
‘আমি বুঝতে পারছি ভারত সরকার ইন্দো বাংলাদেশে ফরাক্কা চুক্তি( ১৯৯৬) পর্যালোচনা করতে চাইছে। এটা ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু আপনারা জানেন যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জলবণ্টন সংক্রান্ত ব্যাপার। তবে এটার উপর বাংলার মানুষের জীবনযাত্রা নির্ভর করে, কলকাতা পোর্টের নাব্যতার ব্যাপার রয়েছে। ’
‘আমি বলতে চাইছে নদী সংক্রান্ত ধারা অনেকটা বদলে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে বাংলার উপরেও। জলঙ্গি আর মাথাভাঙা পদ্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সুন্দরবনে ফ্রেশ জল যাওয়া কমে গিয়েছে।’ এরপর তিনি নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
সেই সঙ্গেই তিস্তা জলবণ্টন সংক্রান্ত ব্যাপারে তিনি লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে তিস্তা জলবণ্টন সংক্রান্ত ব্যাপারেও আপনাদের আলোচনা হয়েছে। সিকিমে একাধিক জলবিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার জেরে তিস্তাও ভুগছে। এর সঙ্গে উপরিভাগে গাছ কাটা ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের ব্যাপারটিও রয়েছে। মনে হচ্ছে ভারত সরকার বাংলাদেশে তিস্তাকে বাঁচানোর জন্য একটা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি যে জলশক্তি মিশন ভারতের দিকে তিস্তা বাঁচানো নিয়ে কোনও কিছু করছে না। যার জেরে ভারতেও তিস্তার জল কমছে প্রতিবছর। এরপর যদি বাংলাদেশে পাঠাতে হয় তবে তো উত্তরবঙ্গের কৃষি সেচ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। …সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার জল ভাগাভাগি করাটা যথাযথ হবে না। ’