শহর লাগোয়া থেকে শুরু করে গ্রামবাংলার সমবায় নির্বাচনে বারবার জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখনও সেই ধারা অব্যাহত আছে। তবে কয়েক দশক ধরে একটি সমবায় থেকে গিয়েছিল অধরা। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার ক্ষমতায় আসার পরও এই সমবায় তাদের হাতে আসেনি। দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে এই সমবায় এসইউসিআই দলের হাতে ছিল। সেই দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্কের ক্ষমতা এবার অবশেষে এল তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। রবিবার জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন হয়। সেখানে ৯টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোট ৩০টি আসনে ভোট হয়। আর তাতেই ঐতিহাসিক জয় আসে তৃণমূল কংগ্রেসের।
বাম–অতিবামদের বহু সমবায়ই হাতছাড়া হয়েছে। বিজেপিকেও বহু সমবায় নির্বাচনে গোহারা হতে হয়েছে। এই আবহে দক্ষিণ বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতটি বুথ এবং হরিনারায়নপুর অঞ্চলের দুটি বুথে এই নির্বাচন হয়। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার। বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্ক। এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যার বিচারে বাংলার মধ্যে অন্যতম বড়। ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা এখন প্রায় ১৯ হাজার। কড়া পুলিশ প্রহরায় ভোট হয়। ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা যায়, ৩০টি আসনের মধ্যে ২০টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। চারটি আসনে জিতেছে এসইউসিআই। বাকি ৬টি আসনের ফলাফল অমীমাংসিত রয়েছে। এই আসনগুলিতে আগামী দিনে নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশের বিরোধিতায় সিপিএম–কংগ্রেস, কে কি বললেন? খোঁচা কুণালের
এই ঐতিহাসিক জয়ে স্বাভাবিকভাবে খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে জয়নগরে। এই জয়ের আনন্দে সবুজ আবির ছড়িয়ে পড়ে পথে। জয়নগর বিধানসভার বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস, জয়নগর এক নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তুহিন বিশ্বাস–সহ অন্যান্য নেতারা মেতে ওঠেন। বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে কয়েক দশক ধরে এসইউসিআইয়ের হাতে ছিল দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্ক। আর তাই এলাকার উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দীর্ঘ ১০ বছর পর এই সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন হল। আমরা এতদিন এখানে ঢুকতে পারতাম না। এখন আমরা মানুষের রায়ে এখানে ক্ষমতায় এসেছি। সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন হবে।’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এখানে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের কাজে উপকৃত। তাই দক্ষিণ বারাসত সমবায় ব্যাঙ্কের ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস আসুক তা চান। জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস এই দক্ষিন বারাসতের বাসিন্দা হওয়ায় বাড়তি সুবিধা হয়েছে। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সমবায় সমিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করল। তাই এই জয় তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বাড়তি অক্সিজেন জোগালো। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন এসইউসিআইয়ের জেলা কমিটির সদস্য সুবীর দাস।