বড়দের আন্দোলনে ছোটরা কেন? এই মর্মে বিধাননগর পুলিশের কাছে জবাব তলব করল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। গতকালের (শনিবার - ১৭ মে, ২০২৫) একটি ঘটনা ঘিরে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, হারানো চাকরি সসম্মানের ফেরানোর দাবিতে সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারা। ইতিমধ্যেই একাধিকবার বিক্ষোভস্থলে প্রবল অশান্তি ছড়িয়েছে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে যেমন আন্দোলনরত শিক্ষকরা আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ, তেমনই আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধেও পুলিশকে লক্ষ করে ইট, পাথর, এমনকী ফুলগাছের টব পর্যন্ত ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছে!
এই প্রেক্ষাপটে শনিবার আন্দোলনস্থলে সরকারি, বেসরকারি, কেন্দ্রীয় মিলিয়ে মোট ১০টি স্কুলের কয়েকজন খুদে পড়ুয়াকে দেখা যায়। রীতিমতো প্ল্যাকার্ড হাতে তাদের আন্দোলনের পক্ষে, শিক্ষকদের পক্ষে সওয়াল করতে এবং এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে দেখা যায়। আন্দোলনে অংশ নেওয়া এই শিশিরা একেবারেই নিচু ক্লাসের পড়ুয়া!
এর জেরে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এইটুকু বাচ্চাদের কেন এই আন্দোলনে এভাবে যুক্ত করা হল। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা শিশুদের মোটেও ঢাল করার পক্ষপাতী নন। শিশুরা নিজে থেকেই আন্দোলনস্থলে এসেছে। যদিও শিশুদের হাতে যে প্ল্যাকার্ডগুলি ছিল, সেগুলি মোটেও শিশুদের কাঁচা হাতে লেখা কোনও পোস্টার নয়। রীতিমতো ছাপানো পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়েই শনিবার শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিল তারা। যদিও আন্দোলনস্থলে শিশুদের অভিভাবকরাও ছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।
কিন্তু, এবার এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন। তাদের বক্তব্য, শিশুদের যেভাবে আন্দোলনে ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে জুভেনাইল জাস্টিস আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও রুজু করা হয়েছে।
কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, 'কোনও জমায়েতে যদি শিশুদের দেখা যায়, সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠে। আমাদের কমিশন জানতে চেয়েছে, বিকাশ ভবনের সামনে কতটা সুরক্ষা ছিল? কেন তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হল? বড়দের আন্দোলনে ছোটরা কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর চেয়েছি আমরা।'