রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বিধানসভা পাশ হওয়া বিল আটকে রেখেছেন। এই নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। এমনকী এই বিষয়ে রাজ্যপালকে কর্তব্যের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। পাল্টা রাজভবনও বিবৃতি দিয়েছিল। তাতে রাজ্যের ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছিল। দড়ি টানাটানি চলছিল রাজ্য–রাজভবনের মধ্যে। এমনকী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল নিয়ে আপত্তি তুলে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লেখেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এবার সেই জট কাটল।
এই আবহে রাজ্যপাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন হাসপাতালে গিয়ে দেখা করে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের তিনটি বিলে অনুমতি দিল রাজভবন। আজ রাজভবনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের তিনটি বিলে অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই বিলগুলি হল—পশ্চিমবঙ্গ শহর ও নগর (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) (সংশোধন) বিল, ২০২৩, পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার ও প্রজাস্বত্ব ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) বিল, পশ্চিমবঙ্গ কর ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) বিল, ২০২২। সুতরাং এই বিলগুলি শীঘ্রই আইনে পরিণত হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মন্দারমণি–তাজপুরে হঠাৎ ভিড় বাড়ল পর্যটকদের, কেন এমন ঘটল? জগন্নাথ মন্দির তো দিঘায়!
এই খবর পৌঁছে গিয়েছে দিঘায়। এখন সেখানে আছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই তিনটি বিলে ছাড়পত্র দেওয়ায় জগন্নাথদেবকে প্রণাম জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তিনটি বিলে রাজ্যপাল সই করার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশন (সংশোধন) বিল, ২০২৫’ উত্থাপনের প্রস্তাবও দিয়েছেন রাজ্যপাল। যা যথেষ্ট তাৎপর্য়পূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাজ্যপালের এই প্রস্তাব বা পরামর্শ নিয়ে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করেননি।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুর সরকার সুপ্রিম কোর্টে তাদের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিল আটকে রাখা নিয়ে মামলা করেছিল। তখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে। এমনকী রাষ্ট্রপতির সময়সীমাও বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলে দেয়, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালদের আটকে রাখা ‘বৈধ’ নয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একাধিক বিল আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে। এবার মধুরেণ সমাপয়েৎ হল।