মাটির তলায় চিরতরে মেট্রো সুড়ঙ্গের ঢাল হয়ে থেকে যাবে টানেল বোরিং মেশিন ‘উর্বী’র ইস্পাতের খোল। আগেই তার ভিতরের সমস্ত যন্ত্রাংশ একে একে বের করে নেওয়া হলেও উর্বীর খোল অর্থাৎ বাইরের পুরু ইস্পাতের গোলাকৃতি পরিকাঠামোটি মেট্রো সুড়ঙ্গের দেওয়াল হয়ে থেকে যাবে।মেট্রোর এক আধিকারিকের মতে, উর্বীর স্বাভাবিক মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। ফলে ওই যন্ত্র আর ব্যবহার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে উর্বীর আবরণ সুড়ঙ্গের দেওয়াল হিসেবে ব্যবহার করলে কোনও ক্ষতি নেই।’ ইতিমধ্যেই এই টিবিএমের মাটি কাটার জন্য সামনে দিকের ‘টাংস্টেন কার্বাইডের’ তৈরি ব্লেড খুলে নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাইরের আবরণটি এখন শুধু পাইপের মতো ফাঁপা ইস্পাতের খোল হিসাবে রয়ে গিয়েছে।মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, ঊর্বীর দ্বিস্তরীয় এই খোলটি প্রায় ৫০ মিলিমিটার পুরু ইস্পাতের তৈরি। যা ভূগর্ভের মধ্যে ৪০ গুণ পর্যন্ত বায়ুমন্ডলীয় চাপ সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে। ফলে, ঊর্বী চিরতরে বিদায় নিলেও তার গোলাকৃতি খোলটি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের দেওয়াল হয়ে রয়ে যাবে। কারণ, উর্বীর খোল এমন পোক্ত করে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে ভূগর্ভের জল, অম্ল ছাড়াও ক্ষারীয় চরিত্রের মাটি তার আবরণের কোনও ক্ষতি করতে না পারে। ফলে, বৃহৎ আকারের গোলাকৃতি পাইপের মতো দেখতে এই খোল, সুড়ঙ্গের একটি অংশের দেওয়ালের কাজ করবে। উর্বীর খোল সুড়ঙ্গের ওই অংশটিতে চারিদিকের মাটির চাপ ধরে রাখতে সক্ষম। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গতবছর অক্টোবরে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত অংশের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শেষ করেছে উর্বী। চলতি বছরের জানুয়ারিতে উর্বীর মুখ ঘুরিয়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের খননের কাজ শুরু করা হয়। এপ্রিল মাসে শিয়ালদহ থেকে বৌবাজার পর্যন্ত ‘চণ্ডীর’ অসমাপ্ত কাজ শেষ করে সে। এখন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের সুড়ঙ্গ খননের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এই সুড়ঙ্গ খননের শুরুতে দু’টি টিবিএম মেশিন নামানো হয়েছিল উর্বী ও চণ্ডী। বৌবাজারের মাটির নীচের সুড়ঙ্গে কংক্রিটের আস্তরণে চাপা পড়ে গিয়েছে চণ্ডী। এখন আপাতত সেটা বার করতে কালঘাম ছুটছে কেএমআরসিএলের।