আজ, ২১ জুলাই, তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে মিটিং-মিছিল হচ্ছে। ১৯৯৩ সালের এই দিনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী। সেই 'শহিদদের' স্মরণ করার উদ্দেশেই তৃণমূল থেকে কংগ্রেস, এমনকী বিজেপিও সভার আয়োজন করেছে। এরই মাঝে ২০ জুলাই রাতে সোদপুরে পথে নামেন আরজি কর নির্যাতিতার মা-বাবা। তাঁদের সঙ্গে সেই মিছিলে পা মেলান অনেক সাধারণ মানুষও। (আরও পড়ুন: প্রয়াত মমতার প্রথম মন্ত্রিসভার সদস্য, বিধায়ক ছিলেন টানা ৩০ বছর)
আরও পড়ুন: ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই 'শহিদ' হয়েছিলেন যুব কংগ্রেসের কোন ১৩ জন? কী হয়েছিল সেদিন?
২০ জুলাই রাতে মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'আমরা মনে করি, আমাদের মেয়েও শহিদ হয়েছে। আর ২১ জুলাই শহিদ দিবস। আমরাও শহিদ পরিবার। যারা দোষীদের আড়াল করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় এই নিয়ে কী বলেন, সেদিকেই তাকিয়ে আছি।' সম্প্রতি অভিযোগ করা হয়, আরজি কর মামলায় তদন্তকারী অফিসার বিনীত গোয়েলের ব্যাচমেট। এই নিয়ে নির্যাতিতার আইনজীবী বলেছিলেন, 'বিনীত গোয়েল সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসারের ব্যাচমেট বলেই কি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হচ্ছে না?' তবে সিবিআই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কার্যত ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে বিনীত গোয়েলকে। এই আবহে নির্যাতিতার মা বলেছিলেন, এরকম তদন্ত কোনওদিন দেখিনি। (আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের মন জয়ে একুশের মঞ্চে তৃণমূলের 'হাতিয়ার' NRC নোটিশ পাওয়া ব্রজবাসী?)
আরও পড়ুন: ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে কলকাতায় 'তৃণমূলের বাংলাদেশি নেত্রী'!
এদিকে আরজি কর খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায় সম্প্রতি নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। সঞ্জয় রায়ের দাবি, তাকে বেকসুর খালাস দিতে হবে এই মামলায়। উল্লেখ্য, এর আগে আরজি কর কাণ্ডে শুধুমাত্র সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে আদালতে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শুধুমাত্র সঞ্জয়কে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করেই চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। এই আবহে সিবিআই তদন্তে 'অসন্তোষ' প্রকাশ করেছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। তাদের বরাবর দাবি, নির্যাতিতার খুনি এখনও আরজি করের চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টেই আছে।
আরও পড়ুন: মোদীর কালী ভক্তি নিয়ে প্রশ্ন! 'TMC-র মিথ্যাচার' নিয়ে সরব BJP বলল- 'মা সব দেখছেন'
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মামলায় চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান বিচারক অনির্বাণ দাস। এদিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমনা দিতে হবে সঞ্জয় রায়কে। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি আদালতের তরফ থেকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ (ধর্ষণ), ৬৪ (ধর্ষণের সময় এমন ভাবে আঘাত করা, যাতে মৃত্যু হয়), ১০৩ (১) নং (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই আবহে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬৬ ধারায় আওতায় আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ১০৩ (১) ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবনের সাজা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিকে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাষ্ট্রকে। বিচারক বলেছিলেন, এই মামলা বিরলের থেকে বিরলতম নয়। যদিও সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে আদালতে জোর সওয়াল করেছিল সিবিআই।