আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা চিকিৎসকের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত ঘিরে প্রথম থেকেই রহস্য এবং সন্দেহ ছিল। সেই সন্দেহের জাল কেটে নাকি এখনও সত্যের পথে এগোতে পারেনি সিবিআই তদন্তকারীরা। এই আবহে সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্টে এবার দাবি করা হল, সিবিআই এখনও সঠিক ভাবে জানে না যে নির্যাতিতার ধর্ষণ খুনের আগে হয়েছিল কি পরে। ময়নাতন্তের রিপোর্টে উল্লেখিত 'অ্যান্টিমর্টেম' শব্দটি ঘিরেই মূলত এই রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের পাশাপাশি মর্গের ডোমদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে এরই মাঝে আবার আনন্দবাজার পত্রিকার এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে ডোমদের সেদিন সন্ধ্যায় মৃতদেহের কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। যদিও সেই ময়নাতদন্তের জনে নাকি ২ জন ডোমকে নিয়োগ করা হয়েছিল। (আরও পড়ুন: বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, উৎসবের মরশুমে বাড়ছে ন্যূনতম বেতন, ডিএ বৃদ্ধি ৩.২%)
আরও পড়ুন: আরজি করের 'ছায়া' কলকাতা মেডিক্যালে, তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
আরও পড়ুন: রবিবাসরীয় বাজার মাতাবে পদ্মার ইলিশ, আরও রুপোলি শস্য এল ভারতে, দাম কত জানেন?
নির্যাতিতার মৃতদেহের আঘাতগুলি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। বে রিপোর্টের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখার পর তদন্তকারীরা মনে করছেন, হতে পারে খুন অন্য কেউ করে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে বেশ কয়েক দফায় ইতিমধ্যেই জেরা করেছে সিবিআই। এদিকে গত বুধবার আরজি করের মর্গের এক কর্মীকেও। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই কর্মী ক্লার্ক স্তরের। ময়নাতদন্তের পরের পর্যবেক্ষণ লেখায় ওই কর্মীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তাঁকে অপূর্বের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়। তাতে নাকি পরস্পরবিরোধী তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, অপূর্বের আগের বয়ানের সঙ্গে এ দিন ওই ক্লার্কের বয়ানের পার্থক্য রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে। উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই ময়নাতদন্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। এরই মাঝে কয়েকদিন আগে আনন্দবার পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে একের পর এক প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ময়নাদন্তের প্রক্রিয়া নিয়ে। এমনকী দাবি করা হয়, তদন্তকারীদের মনেও প্রশ্ন উঠছে যে জেনেুঝেই ময়নাতদন্তে গাফিলতি করা হয়েছে কি না? রিপোর্ট অনুযায়ী, দুই চিকিৎসক এবং ডোমেদের বয়ানে ময়নাতদন্ত নিয়ে 'বিচলিত' সিবিআই আধিকারিকরা। এদিকে ভিডিয়োগ্রাফি থেকে স্পষ্ট কিছু বোঝা যাচ্ছে না। দিল্লি এবং কল্যাণী এইমসের বিশেষজ্ঞদের সেই ভিডিয়ো দেখানো হয়েছে। তবে তা থেকে কিছু বেরিয়ে আসেনি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, আরজি কর কণ্ডে তদন্তের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা দাবি করেছেন, ময়নাতদন্তের যে ভিডিয়োগ্রাফি হয়েছে, তার মান খুবই খারাপ। এই আবহে মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট ভাবে বোঝাই যাচ্ছে না। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, এই ত্রুটি কি ইচ্ছে করে ঘটানো হয়েছে? এই আবহে সিবিআই সন্দেহ করছে, সত্যিকে আড়াল করতেই ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়ায় ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। এদিকে সেদিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ সূর্যাস্তের পর হয়েছিল। সেখানে পোস্টমর্টেম রুমের আলো কম ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে আরও দাবি করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই (১ ঘণ্টা ১০ মিনিট) এই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। সেদিন আরজি করে মোট আটটি দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল। এবং তরুণী চিকিৎসকের ময়নাতদন্তেই নাকি সবচেয়ে কম সময় লেগেছিল। এদিকে জেরা করে এক ময়নাতদন্তকারী অফিসারের থেকে নাকি সিবিআই জেনেছে, পোস্টমর্টেমে তাড়াহুড়ো করা নিয়ে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন, তবে সেই আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি।