কলকাতার ট্রামের সঙ্গে অনেকের অনেক রকম নস্টালজিয়া থাকে। কিন্তু সেই কলকাতার ট্রাম হয়তো এবার বরাবরের মতো স্মৃতির পাতায় চলে যেতে পারে। দ্রুত গতির এই শহরে ট্রামের মতো এত ধিকধিক করে চলা যানের হয়তো আর জায়গা হবে না। তাছাড়া শহর জুড়ে রাস্তার উপর পেতে রাখা ট্রামলাইনের জন্য কিছুটা হলেও সমস্যা হয়। নানা সময় এই ট্রামলাইনে স্কুটার, বাইকের চাকা হড়কে গিয়ে সমস্যা হয়ে যায়। সব মিলিয়ে এই ট্রামকে নিয়ে সরকার এবার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে।
১৫০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে কলকাতার ট্রাম। তবে দুষণের জেরে যখন চোখ জ্বালা করে শহরবাসীর তখন এই ট্রাম কিন্তু একেবারে দুষণ ছড়ায় না। দোষের বলতে একটু আস্তে চলে এই ট্রাম। তবে সেই ট্রামের নিয়মিত চলাচল এবার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বর্তমানের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই রাজ্য সরকার হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে চলেছে সরকার। আসলে একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের ট্রাম নিয়ে কী ভাবনা, ট্রাম নিয়ে সরকারে কী নীতি সেটা জানতে চেয়েছিল আদালত। সেক্ষেত্রে আপাতত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে নিয়মিতভাবে ট্রাম আর চালানো না হতে পারে কলকাতা শহরে। এবার আদালতে তা লিখিতভাবে জানাতে চলেছে সরকার।
বর্তমানে তিনটি রুটে ট্রাম চলে কলকাতায়। টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট- ধর্মতলা ও ধর্মতলা- শ্যামবাজার। এই রুটেও উঠে যেতে পারে ট্রাম।
তবে কি কলকাতা শহরে আর ট্রাম দেখা যাবে না?
কলকাতা শহরে এলে ট্রাম দেখা যাবে। ট্রামে চড়াও যাবে। কেবলমাত্র ট্রামের জয়রাইড থাকবে কলকাতায়। দেশি, বিদেশি পর্যটকদের জন্য ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত লুপ লাইনে ট্রামের জয়রাইড কেবলমাত্র থাকবে। কিন্তু নিয়মিতভাবে কলকাতা শহরে যাত্রীদের জন্য় ট্রাম আর না চলতে পারে।
নিঃসন্দেহে এটা অনেকের কাছে মন খারাপের খবর। অনেকেই তাদের প্রিয় ট্রামকে মিস করবেন। নতুন প্রজন্ম দেখবে ঝকঝকে কলকাতাকে। কিন্তু ঝলমলে কলকাতায় কোথায় যেন হারিয়ে যাবে সেই ট্রামে চাপা অলস সন্ধ্যা।
ট্রাম নিয়ে মূল সমস্যাটা কোথায়?
ট্রামের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা হল এগুলি যানজট তৈরি করে। একবার রাস্তার মাঝে খারাপ হয়ে গেলে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। এর জেরে দ্রুতগতির কলকাতায় বড্ড বেমানান হয়ে গেল ট্রাম। তবে ট্রাম লাইনের জেরে অন্যান্য গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে এটা মাঝেমধ্য়েই দেখা যায়।