একদিকে জেলায় জেলায় কার্নিভাল। আলোর রোশনাই, ঝলমলে প্রতিমা। আর সেই আলোর নীচেই জমাট বাঁধা অন্ধকার। আজও এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা কলকাতায় ধরনায় বসে রয়েছেন। পুজোর সব দিনই তাঁরা এভাবেই ধরনায় বসেছিলেন।
উত্তরবঙ্গে আবার অন্য ছবি। মালবাজারে হড়পা বানে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে আটজনের। একদিকে যখন কার্নিভালের আনন্দে ভাসবে তখনও প্রিয়জনের জন্য ডুকরে কাঁদবেন মালবাজারের স্বজন হারারা। কাল যখন এক এক করে প্রতিমা যাবে কলকাতার রাজপথ ধরে তখনও একরাশ বঞ্চনা বুকে নিয়ে থাকবেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। তবে সূত্রের খবর কার্নিভালের জেরে আপাতত চাকরিপ্রার্থীদের উঠে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে। তবে একদিনের জন্য় ধরনামঞ্চ ত্যাগ করতে রাজি তাঁরা।
এদিন এক বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গোটা পুজোটা ধরনামঞ্চেই কেটে গেল। এখনও আমরা আশা হারাইনি। মাননীয়ার কাছে একটাই অনুরোধ কার্নিভালে যাওয়ার আগে একবার এখানেও ঘুরে যান।
আসলে অনেকের মতে, এক অদ্ভূত বৈপরীত্য তৈরি হয়েছে বাংলা জুড়ে। মালবাজারের ঘটনার জেরে জলপাইগুড়িতে কার্নিভাল বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের অন্য় জেলাগুলোতে যথারীতি কার্নিভালের আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ইতিমধ্য়েই সোশ্য়াল মিডিয়ায় দাবি উঠতে শুরু করেছে , একদিকে যখন মালবাজারে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তখন কার্নিভালের মতো এই আনন্দ উৎসব কতটা শোভনীয়?
তবে সহনাগরিকদের অকাল মৃত্যুর জেরে জলপাইগুড়ির একাধিক ক্লাব কার্নিভালে যোগ দিতে চাননি। উত্তরবঙ্গের লেখক, শিল্পী, অধ্য়াপক, চিকিৎসকদের একাংশ ইতিমধ্য়েই জানিয়েছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘটা করে কার্নিভাল করার কোনও যুক্তি নেই। উত্তরবঙ্গে এই কার্নিভাল বন্ধ রাখার দাবি উঠেছে। তবে অনেকের মতে শুধু উত্তরবঙ্গে কেন গোটা বাংলা জুড়ে কার্নিভাল বন্ধ রাখা হোক। সহনাগরিক যখন কাঁদছেন, একের পর এক দেহ আসছে মালবাজারে, বঞ্চনার জেরে হাউ হাউ করে কাঁদছেন চাকরিপ্রার্থীরা তখন কার্নিভালের মতো উৎসব মানায় না।
তবে অনেকের মতে, কার্নিভালের সঙ্গে অনেকের রুটি রুজিরও জড়়িয়ে থাকে। বহুদিনের প্রস্তুতি থাকে। সেক্ষেত্রে আচমকা বন্ধ করা সম্ভব নয়।