যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার এমন রহস্যজনক মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা বাংলা। এই ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিনতলার নীচ থেকে উদ্ধার হয় ওই ছাত্রের মৃতদেহ। এই পরিস্থিতিতে মেয়রের মনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কারণ তিনি নিজেও মেয়ের বাবা।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র স্বপ্নদ্বীপ কুণ্ডু নিহত হয়েছেন। এই ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। এই ঘটনায় রাজভবনে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যপাল অ্যান্টি র্যাগিং সেল খুলেছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের অধীনে নেই। তার উপর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এখন সর্বত্র নিজের ইচ্ছে মতো উপাচার্য বসাচ্ছেন। এইসব নিয়ে বিস্তর চর্চার মধ্যেই যাদবপুর কাণ্ডে ডুগড়ে উঠলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার এমন রহস্যজনক মৃত্যুতে তোলপাড় গোটা বাংলা। এই ঘটনায় মর্মাহত হয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের তিনতলার নীচ থেকে উদ্ধার হয় ওই ছাত্রের মৃতদেহ। এই পরিস্থিতিতে মেয়রের মনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কারণ তিনি নিজেও মেয়ের বাবা। তাই এদিন সংবাদমাধ্যমে মেয়র বলেন, ‘সামান্য সময়ের জন্য একটা মানসিক হতাশায় মেধাবী ছেলেটি চরম পরিণতির সিদ্ধান্ত নিল। আমিও তো বাবা। যাদবপুরের ঘটনা শোনার পর থেকে অস্থির ছিলাম। আমার মেয়েও হস্টেলে থাকবে। কাল রাতে মেয়েকে তাই বললাম, মা কিছু হলে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসবি। কোনওরকম টেনশন নিবি না।’
কেন এমন ঘটনা ঘটছে? অন্যদিকে নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা মেধাবী ছাত্র স্বপ্নদ্বীপ র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা শুনে ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘ঘটনাটা অত্যন্ত দুঃখের। মা–বাবার উচিত বাচ্চাদের নিয়ে বসে কাউন্সেলিং করা। আমাদের ছোটবেলায় অনেক কড়া অনুশাসন ছিল। বাবা বেল্ট দিয়ে মারত। এখনকার ছেলেমেয়েরা ভাবতেও পারবে না। এখন ছেলে–মেয়েরা হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ফেসবুকে মগ্ন। সেটাই জগৎ। কিন্তু তার মধ্যেও মা–বাবাকে বলব, মোবাইল সরিয়ে গল্প করুন। ওদের মনের কথা জানুন।’
ফিরহাদের স্মৃতিচারণ ঠিক কী? একটা সময় মেয়র নিজেও নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। তবে পরিণত মনের জন্য সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। মেয়রের কথায়, ‘অনেক সময় অযথা অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি আমাকেও হতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নানাভাবে এজেন্সি দিয়ে হেনস্তা করেছে। তখন আমারও এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছে জীবনটা রেখে কী হবে? এত অপমান! সেই সময়টায় নিজে নিজেকে প্রশ্ন করেছি, এত মানুষের জন্য কাজ করছি। সেটা কি কিছু নয়? স্কুল, কলেজ হোক বা কর্মক্ষেত্র সব জায়গাতেই অপমান শুনতে হয়। তখন প্রিয়জনের সঙ্গে গল্প করবেন। মনটা অনেক হালকা হবে।’