বৈধ রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্ত থাকলেই, রেশন দোকানে আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন তুলতে পারবেন উপভোক্তারা। যাঁরা ইতিমধ্যে সেটা করিয়েছেন, সেই সমস্ত কার্ড ধারকরা ই-পস (ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেল) মেশিনে আঙুলের ছাপ ব্যবহার করেই রেশন তুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আর গ্রাহকদের রেশন কার্ড সঙ্গে করে বয়ে নিয়ে যেতে হবে না।
গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল, প্রত্যেক রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্ত করাতে হবে। তাছাড়া এটাও জানানো হয়েছিল যে, আধার নম্বর না থাকার জন্য কোনও উপভোক্তাকে বঞ্চিত করা যাবে না।
খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘এখনও এটা চালু হয়নি। তবে বৈধ রেশন কার্ড ধারক, যাঁরা কার্ড আধার সংযুক্ত তিনি এই সুবিধা পেতেই পারেন।’ এখন খাদ্যসামগ্রী তুলতে গেলে ‘বার কোড’ যুক্ত ডিজিটাল রেশন কার্ড সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হয় গ্রাহকদের। খাদ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নির্দেশে বলা আছে যে যেহেতু রেশন কার্ডগুলি আধারের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে, তাই রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে না গ্রাহককে। তিনি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিয়ে নির্ধারিত রেশন সামগ্রী নিতে পারবেন।
প্রশাসন সূত্র জানা গিয়েছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা বা এনএফএসএম চালুর আগে রেশনে ৩ ধরনের কার্ড ছিল। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে এখন মোট ৫ ধরনের কার্ড রয়েছে।
২০১১ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ও পুরসভাগুলির সাহায্যে নাগরিকদের আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ সমীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে খাদ্য দফতর। সেখানে যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা প্রত্যেকেই জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় এসেছেন। সেক্ষেত্রে তিন ধরনের কার্ড গ্রাহকরা পেয়েছেন। প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (পিএইচএইচ), সুপার প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড (এসপিএইচএইচ)ও অন্ত্যোদয় অন্ন-যোজনা(এএওয়াই)। এই কার্ডগুলো আকারে ছোটো ব্যাঙ্কের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মতো। ই-পস ( ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেল) মেশিনে এই কার্ড পাঞ্চ করলে, গ্রাহকদের তথ্য ফুটে ওঠে মেশিনে। তারপর কত পরিমাণে সামগ্রী দেওয়া হল, সেটা নথিভুক্ত করা হয়। এই ধরনের কার্ড ধারকদের সংখ্যা ২৬,৮৪,৭৪৬ জন।
আবার পরবর্তীকালে রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনার ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পের অধীনে দু’ধরনের কার্ড দেওয়া হয়, রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা ১ ও আরকেএসওয়াই ২। সেগুলি ডিজিটাল কার্ডের চেয়ে আকারে বড় সবুজ ও সাদা রঙের ল্যামিনেশন করা কাগজের তৈরি। এতেও বার কোড যুক্ত করা রয়েছে। তবে এটা ই-পস মেশিনে ব্যবহার করা যায় না। প্রথাগত ভাবে কার্ডের পিছনে হাতে লিখে দেন রেশন দোকানদাররা। এই কার্ড পেয়েছেন ১৬,৫৭,১৭৭ জন।