১৯৮৫ সালে বিতর্কিত শাহ বানো মামলার কাহিনী এবার উঠে আসবে বড় পর্দায়। আর এই ছবিতে শাহ বানো চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন ইয়ামি গৌতম। ইমরান হাশমি অভিনয় করবেন শাহ বানোর প্রাক্তন স্বামী আহমেদ খানের চরিত্রে। খুব শীঘ্রই বড়পর্দায় মুক্তি পাবে এই ছবি।
শাহ বানো মামলা
১৯৭৮ সালে ৬২ বছর বয়সী শাহ বানো তাঁর প্রাক্তন স্বামী মোহাম্মদ আহমেদ খানের কাছ থেকে ভরণপোষণ চেয়ে ইন্দোরে একটি আবেদন করেছিলেন। ৪ দশকের বেশি সময় ধরে বিবাহিত জীবন এবং পাঁচ সন্তানের মা, তালাকপ্রাপ্ত ওই মহিলা পেশায় আইনজীবী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষনের দাবি জানিয়েছিলেন, যা তার আগে কোনও মুসলিম মহিলা জানাতে পারেননি।
আরও পড়ুন: রাগী বিক্রম থেকে ভীতু অনির্বাণ, ‘মৃগয়া’-র ফার্স্ট লুক প্রকাশ্যে আনলেন ঋত্বিক
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা করলেন ‘তারক মেহেতা’ খ্যাত অভিনেতা, মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কিছু?
শাহ বানো ১৯৭৩ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা ব্যবহার করেছিলেন, যেটি ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ বিধান। যার সাহায্যে একজন তালাকপ্রাপ্ত মহিলা ভরণপোষণের দাবি করতে পারে যদি তিনি নিজেদের ভরণ পোষণ চালাতে অক্ষম হন। তবে শাহ বানোর এই মামলার বিরোধিতা করেছিলেন তাঁর স্বামী আহমেদ খান। আহমেদের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, সারাজীবন নয়, শুধু বিবাহ বিচ্ছেদের ইদ্দতকালীন সময়ে একজন পুরুষ তাঁর স্ত্রীর ভরণপোষণ করতে বাধ্য থাকেন। আহমেদ খানের এই যুক্তিকে সমর্থন করে অল ইন্ডিয়া মুসলিম ব্যক্তিগত আইন বোর্ড। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন: ২ লক্ষ টাকার ‘সুপারি’, সলমনের পর প্রাণনাশের হুমকি টাইগারকে, পুলিশের হাতে পড়ল ধরাও
সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড় মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে শাহ বানোর ভরণপোষণের অধিকারকে সমর্থন করেন। শুধু তাই নয়, ভরণপোষণের আর্থিক পরিমাণও বৃদ্ধি করে সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলাটি লিঙ্গ নিরপেক্ষতা, ধর্ম নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ছিল। বিশেষ করে ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এই মামলা একটি মাইলফলক তৈরি করে।
এই মামলা জিতে শাহ বানো শুধু নিজে অধিকার পেয়েছেন তা নয়, আপামর তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের অধিকার পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন। এই মামলার পর ১৯৮৬ সালে সরকার মুসলিম মহিলা আইন প্রণয়ন করে। এই মামলাটি ভারতের সাংবিধানিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হওয়ার পাশাপাশি একটি বিতর্কিত মামলা হিসেবে পরিচিত হয়েছিল।