রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলের এক শিক্ষিকার ১৩ মাস ধরে বেতন আটকে রাখার দায়ে কিছুদিন আগেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বেতন মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলায় এবার প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহার বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। জেলা পরিদর্শককে ভুল তথ্য দেওয়া, মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে অন্ধকারে রাখার মতো অভিযোগ উঠেছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ, প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে পারবেন না কালীচরণ সাহা।মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতিকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের কাছে ভুল স্বীকার করে কার্যত ক্ষমা চেয়ে নেন প্রধান শিক্ষক। এ প্রসঙ্গে বিচারপতির মন্তব্য, ‘স্কুলে হেডমাস্টারের জমিদারি চলছে।’ প্রধান শিক্ষকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে এই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের নির্দেশে প্রধান শিক্ষক শুধু পদ হারিয়েছেন তাই নয়, তাঁর স্কুলে প্রবেশ বন্ধ করার পাশাপাশি তিনি কোনও কাগজপত্রে সই করতে পারবেন না। হাইকোর্ট সূত্রের খবর, এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারেন প্রধান শিক্ষক। অন্যদিকে, এই স্কুলের অন্য এক শিক্ষক মহিদুর আলমকে তথ্য গোপন করার দায়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারপতি। ওই শিক্ষক একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন। তাই তাকে পুনরায় স্কুলে বহালের আর্জি খারিজ করেছে সিঙ্গেল বেঞ্চ। তাঁর জায়গায় শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়কে নিয়োগের জন্য ডিআই’কে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, বোর্ডের নির্দেশে রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলে বদলি হওয়ার পরেও ১৩ মাস ধরে তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। যার ফলে তিনি ১৩ মাস বেতন পাননি। এরপরে তিনি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য দুই শিক্ষককে ওই শিক্ষিকা সংযুক্তার বেতনের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাকে স্কুলে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।