সম্প্রতি তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে ঠাকুরনগরের মতুয়াধামে এসেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তাঁকে সেখানে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তখন সেখানে তৃণমূল–বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয় বলেও অভিযোগ। কয়েকশো পুলিশ ফোর্স নিয়ে মতুয়াধামের কাছে মিছিল করতে চেয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মতুয়া সম্প্রদায় তা করতে দেয়নি বলে মতুয়া অনুগামীদের মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে তৃণমূলের লোকজন বলে অভিযোগ ওঠে।
এই অভিযোগের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। বরং পাঁচটি এফআইআর দায়ের করা হয় প্রহৃতদের বিরুদ্ধে এবং বিজেপি’র কিছু কর্মী–সমর্থককে গ্রেফতারও করা হয়। তাই গোটা ঘটনার বিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। আজ, সোমবার তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মামলার শুনানি হবে মঙ্গলবার। পুলিশ এবং অভিষেকের ভূমিকা নিয়ে তিনি হলফনামা দিয়ে বিচার চেয়েছেন বলে খবর।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল? গত ১১ জুন ঠাকুরনগরে মতুয়াধাম এসে মন্দিরে পুজো দেবেন বলে কথা ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই সকাল থেকে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা মন্দির চত্বর সাজানো শুরু করেন। কিন্তু দুপুরে অন্য দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। মতুয়াদের একাংশ হঠাৎ বচসায় জড়িয়ে পড়েন। যা দেখে বেশ অবাক হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। ভেঙে ফেলা হয় অভিষেকের জন্য তৈরি তোরণও। তৃণমূল কর্মীরা তখনই অভিযোগ করেন, এলাকার সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বেই এই কাজ ঘটানো হয়েছে। তাতে বিজেপি কর্মীরা যুক্ত। ধুন্ধুমার পরিস্থিতিতে মূল মন্দিরের ফটক বন্ধ করে দিতে হয়। তখন পাশের মন্দিরে পুজো দেন অভিষেক।
তারপর ঠিক কী ঘটেছিল? এই ঘটনা দেখে বেশ ক্ষুব্ধ হন অভিষেকও। তিনি এখানে বিকেলে আসেন। আর দুপুরে গণ্ডগোল হয়। সেই ছবি কর্মীরা অভিষেকের মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ করে দেন। যা আসার সময় দেখেন তিনি। অভিষেক তারপর সেখানে পৌঁছলেও মূল মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি। পাশের মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন অভিষেক এবং বাইরে এসে সরাসরি শান্তনু ঠাকুরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘মতুয়াধাম কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমি তিন মাস পর আবার আসব। পারলে আটকান।’ এবার শান্তনু ঠাকুর গেলেন কলকাতা হাইকোর্টে।