জুনিয়রদের আন্দোলনের সমর্থনে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা গণইস্তফা দিলেন। মঙ্গলবার প্রায় ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার গণইস্তফা দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেছেন যে তাঁরা চাকরি থেকে ইস্তফা দেননি। আপাতত শুধু ডিউটি থেকে ‘ইস্তফা’ দিচ্ছেন। তবে তারপরও সরকার কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না করলে ব্যক্তিগতভাবে ইস্তফা দেওয়ার পথেও হাঁটতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরজি করের সিনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু ঠিক পুজোর মুখেই তাঁরা ডিউটি থেকে ‘ইস্তফা’ দেওয়ায় আরজি করের স্বাস্থ্য পরিষেবা জোরদার ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও গণইস্তফা দেওয়া এক চিকিৎসক দাবি করেছেন যে এটা একটা প্রতীকী প্রতিবাদ। গণইস্তফা দিয়েছেন মানেই যে আগামিকাল থেকে কাজ বন্ধ করে দেবেন, এমন নয়। সরকারকে একটা বার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা। হাসপাতাল খালি করে তাঁরা যাবেন না।
জুনিয়রদের শরীরের অবনতি হচ্ছে, উদ্বিগ্ন সিনিয়ররা
সেই ‘গণইস্তফা’-র বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। আর তাতে আরজি করের সিনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেছেন, তাঁরা রোগীদের সেরা পরিষেবা দিতে মরিয়া। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রোগীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানের কাজটা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। আর যে জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশন করছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে সরকার যাতে অনশনকারীদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে, সেই আর্জি জানিয়েছেন ‘গণইস্তফা’ দেওয়া সিনিয়র চিকিৎসকরা।
ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ, হুঁশিয়ারি সিনিয়রদের
তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে জুনিয়র ডাক্তাররা আমরণ অনশন করলেও চোখ বুজিয়ে আছে সরকার। আর সেটার প্রতিবাদে তাঁরা আপাতত ‘গণইস্তফা’ দিচ্ছেন। যদি পরবর্তীতে প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রত্যেকে আলাদা-আলাদা করেও ইস্তফা দেওয়ার পথে হাঁটবেন বলে রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন ও রাজ্য
আর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তাররা যেদিন গণইস্তফা দিলেন, তার দু'দিন আগে থেকে আমরণ শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের কয়েকজন প্রতিনিধি। সরকার তাঁদের দাবিপূরণ করেনি বলে অভিযোগ তুলে গত শনিবার থেকে অনশন শুরু করেন ছ'জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের মধ্যে অবশ্য প্রাথমিকভাবে আরজি করের কোনও প্রতিনিধি ছিল না। পরবর্তীতে অনশন শুরু করেন অনিকেত মাহাতো।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, সরকারের তরফ থেকে তাঁরা এখনও কোনও সদর্থক প্রতিক্রিয়া পাননি। যদিও সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে পাশে নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্ত আর্জি জানান যে জুনিয়র ডাক্তাররা যেন কাজে ফিরে আসেন। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, তাঁরা ইতিমধ্যে কাজে ফিরে এসেছেন।