শিশুমৃত্যু কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। মাঝরাতে আবার বিসি রায় শিশু হাসপাতালে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। বারাসতের কদম্বগাছির দেড় বছরের শিশুকন্যা আটদিন ধরে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয় শিশুটি। মাঝরাতে মারা যায় শিশুটি। আবার মৃত্যু হয়েছে ২৬ দিনের এক সদ্যোজাতেরও। উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার রানিগাছি এলাকায় শিশুটির বাড়ি। তিন সপ্তাহ ধরে এসএনসিইউয়ে ভর্তি ছিল শিশুটি। রাত ১টা নাগাদ শিশুপুত্রকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আজ, মঙ্গলবার মৃতের পরিবারের হাতে দেহ দুটি তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি মাস থেকে আজ পর্যন্ত ১৪৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে গোটা বাংলায়। সকলেরই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল জুড়ে শুধু কান্নার রোল। কোল খালি হওয়া মায়েদের কান্না, হাহাকার। অসহায় অবস্থায় ছুটে বেড়াচ্ছেন বাবারা। শিশুদের সংক্রমণ নিয়ে রোগের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। সোমবার সেই টাস্ক ফোর্সের প্রথম বৈঠক হয়। সেখানে অ্যাডিনোভাইরাস–সহ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) রোধে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাথমিক সচেতনতার কাজটি করতে বলা হয়। একই কাজ আশা কর্মীদেরও করতে বলা হয়েছে। প্রোটোকল মেনে চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে এই টাস্ক ফোর্স। এমনকী এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে আজ, মঙ্গলবার বৈঠকে বসবে স্বাস্থ্য কমিশন। ঋতু পরিবর্তনের জেরে অসুখ–বিসুখের ও অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গ নিয়েও শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালগুলিতে। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? পর পর শিশুদের মৃত্যু নিয়ে জোর আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সব শিশু হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে হাহাকার পড়ে গিয়েছে। যা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাজ্যের মানুষজনের মধ্যে। ভাইরাল ফিভার এবং অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গ নিয়েও শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ব্লক থেকে শুরু করে জেলা হাসপাতালে। দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের ছবিটা একই। দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। পরিস্থিতি নজরে রাখতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক http://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup