আরটি ইন্ডিয়া। এটা হল রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদমাধ্যমের ইন্ডিয়ার ইউনিট। তারা কালীমূর্তি ভাঙার একটি ভিডিয়োর ফ্যাক্ট চেক করেছে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হচ্ছিল যে বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। এটা তারই ভিডিয়ো।
তবে ওই সংবাদমাধ্যমের ফ্য়াক্ট চেকে যে বিষয়টি উঠে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, আদৌ ওটা বাংলাদেশে মন্দিরে হামলার ঘটনা নয়। ওটা হল পূর্ব বর্ধমান জেলার একটি কালী মূর্তি বিসর্জনের ছবি। সেখানে স্থানীয় স্তরে একটি প্রথা রয়েছে। যার মাধ্য়মে কালী মূর্তি উপর মানুষের পিরামিড তৈরি করা হয়। আর সেই ভিডিয়োকেই হিন্দু মন্দিরে হামলা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খবর এনডিটিভি সূত্রে।
তবে ওই সংবাদমাধ্যম এনিয়ে ফ্য়াক্ট চেক করেছিল। তাদের দাবি, সুলতানপুর পুজো কমিটি জানিয়েছে, গত ২৬শে নভেম্বর এই প্রথা তারা পালন করেছে। এভাবেই তারা প্রতিমার বিসর্জন দেন। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে প্রতিমার মাথাটা আলাদা করা হচ্ছে। আসলে এটাই প্রথা। সেটাই পালন করেছেন তারা।
আরটি ইন্ডিয়া তাদের এক্স হ্যান্ডেলে সেই ভিডিয়ো শেয়ার করেছে। সেখানে তারা লিখেছেন, হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে বাংলাদেশে। ফুটেজে দেখা গিয়েছিল জনতা প্রতিমা ধ্বংস করছে। আসলে একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ছবির সঙ্গে ভিডিয়োর ছবি অনেকটা মিলে যায়। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল সুলতানপুর গ্রামে ৬০০ বছরের প্রাচীন কালীপুজো হয়।
এই পুজোকে ঘিরে নানা কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। ১২ ফুটের কালী প্রতিমা মন্দিরে রোজ পুজো করা হয়। প্রতি ১২ বছর অন্তর সেই প্রতিমার ভাসান দেওয়া হয়। এবছর প্রতিমা ভাসান দেওয়ার বছর ছিল। এরপর নতুন মূর্তিতে পুজো হবে। পরের ভাসান আবার ১২ বছর পরে।
এদিকে ফেসবুকে সুলতানপুরের কালীপুজো বলে সার্চ করার পরে একটা ভিডিয়ো এসেছিল। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায় আসলে সেটা সুলতানপুরের কালীপুজো ভাসানের একটি প্রথা। সেই প্রতিমার অংশ থেকে যে অংশগুলি বিচ্ছিন্ন করা হয় সেগুলিকে পরম শ্রদ্ধায় বাড়ি নিয়ে যান ভক্তরা।
এদিকে রাশিয়ার ওই সংবাদমাধ্য়ম সুলতানপুর পুজো কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এরপর সেই ভাইরাল ভিডিয়ো তাঁদের দেখানো হয়। সেখান থেকে নিশ্চিত করা হয়েছিল বাংলাদেশের ভিডিয়ো বলে যেটা দাবি করা হচ্ছে সেটা আসলে ২৬ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমানে কালী প্রতিমার ভাসানের ভিডিয়ো। এর মধ্যে কোথাও কোনও সাম্প্রদায়িক ব্যাপার নেই। এটা ওই পুজোর প্রথার অঙ্গ।