মুর্শিদাবাদের হিংসার কবলে পড়া মানুষজনদের সঙ্গে আজও দেখা করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিনে রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে নিজেদের মনের কথা বলেন আতঙ্কিত মানুষজন। এর আগে রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেছিলেন যাতে তিনি মুর্শিদাবাদে না যান। তবে আজ তিনি হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের বাড়িতে যান এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের রাজভবনের পিসরুমের ফোন নম্বর দেন। এদিকে বার্তাসংস্থা এএনআই-এর প্রকাশিত এক ভিডিয়োতে ভুক্তভোগীদের রাজ্যপালকে বলতে শোনা যায়, 'আমাদের সেদিন এসে বলা হয়েছিল, যাঁদের বাড়িতে ভালো মেয়ে আছে, তাঁদের বের করে দাও। যতক্ষণ বিএসএফ আছে, ততক্ষণ আমরা নিরাপদ। আমাদের বলেছে, বিএসএফ চলে গেলে কী হবে? পুলিশ আমাদের বাঁচাতে পারবে না। পুলিশকে আমরা চারঘণ্টা ধরে ফোন করেছিলাম। কেউ ফোন তোলেনি। পুলিশ ফোন বন্ধ করে দিয়েছিল রাতে।' (আরও পড়ুন: অসমের পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির জয়জয়কার, বিধানসভা ভোটের আগে 'গ্রাম দখল' হিমন্তের?)
আরও পড়ুন: 'যৌন নিপীড়নও হয়েছে', ঘরছাড়াদের মুখে ওয়াকফ হিংসার কথা শুনে বিস্ফোরক NCW
আজ রাজ্যপাল বলেন, 'তারা (ভুক্তভোগীরা) নিরাপত্তার চাইছেন। এবং তাঁদের অন্যান্য আরও কিছু দাবি আছে। তাঁদের দেওয়া অনেক পরামর্শ আমি শুনেছি। এই সব বিবেচনা করা হবে। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করব। এই বিষয়টার ওপরে আমি নজর রেখে চলব। আমি একবার তাদের সরাসরি আমার সাথে কথা বলতে বলেছিলাম। ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করব। খুব কার্যকর সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।' (আরও পড়ুন: আমেরিকায় খলিস্তানি জঙ্গি গ্রেফতার হতেই পর্দা ফাঁস পাক ISI-এর! কী বলল FBI?)
আরও পড়ুন: মমতা পর্যন্ত জানান শুভেচ্ছা, কিন্তু… দিলীপের বিয়ে নিয়ে কাটকাট মন্তব্য শুভেন্দুর
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল ১১ এপ্রিল থেকে। এই হিংসার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কিশোর আছে। সে গত ১১ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এদিকে ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। এই আবহে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলে তা না নেওয়ার ঘোষণা করেন নিহতের পরিবার। এদিকে এলাকায় শান্তি ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বিএসএফ।
এদিকে ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ধুলিয়ানে একটি শপিংমলেও লুটপাট চালানো হয়েছিল। এদিকে ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামের দাদা আলির বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী বিধায়ককেও হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এছাড়া জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুরের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এদিকে মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।