রাত পোহালেই দিঘার জগন্নাথধামের উদ্বোধন হবে। দিঘায় এখন সাজসাজ রব। আর সেখানে এখন শুরু হয়ে গিয়েছে মহাযজ্ঞ। উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন দিঘার সর্বত্রই শুধু শোনা যাচ্ছে, জয় জগন্নাথ ধ্বনি। এখানে শুরু হয় আজ মহাযজ্ঞ। এখানেই পূর্ণাহুতি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের হাতে করলেন আরতি। তারপরই জগন্নাথ মন্দিরে উড়ল ধ্বজা। এটা নিয়ে আগেই বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ বিকেল ৪টে ১৫ মিনিট নাগাদ শুরু হয় পূর্ণাহুতির কাজ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত রাজেশ দ্বৈতাপতি এবং ইসকনের কর্মকর্তা রাধারমণ দাস।
জগন্নাথ মন্দিরের দৌলতে পর্যটনে বদল আসতে পারে সৈকতনগরী দিঘার। পুরীর নিয়মে দিঘায় জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় শুরু হয় আচার–অনুষ্ঠান। আজ শাস্ত্রীয় মতে শুরু হয় পুজো এবং হোমযজ্ঞ। জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ করতে তৈরি হয় অস্থায়ী আটচালা ঘর। আজ, মঙ্গলবার থেকে সেখানে দু’বেলা পুজো এবং হোমযজ্ঞ চলছে। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধু সেখানে সামিল হন। আজ নতুন করে আরও অনেক পূণ্যার্থী এসেছেন। মন্দিরের ভিতরে যেমন চলছে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তেমন বিপুল জন সমাগম সামলাতে দিঘাজুড়ে পুলিশ নজরদারি করছে।
আরও পড়ুন: ‘দিঘা বাঙালির হানিমুন স্পষ্টও, জগন্নাথ মন্দির উপরি পাওনা’, নবদম্পতিদের বার্তা জুনের
দিঘায় বাঁধানো হয়েছে সমুদ্রের পার। চওড়া এবং পাকা হয়েছে রাস্তাঘাট। চন্দননগরের আলো বসেছে প্রবেশের গেটে। সবমিলিয়ে এখন নবরূপে সেজে উঠেছে দিঘা। তার সঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তায় জোর দিয়ে করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। আগামীকাল, বুধবার মন্দিরের দ্বারোদঘাটন হবে। যজ্ঞের সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে পূর্ণাহুতির পরে পুরোহিতদের হাতে সরবতের গ্লাস তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দিরের শীর্ষে ধ্বজা উত্তোলনের আগে মন্দির প্রাঙ্গণেই মঙ্গলপুজোয় যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানে একটি তুলসীগাছ বসবে। ৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই মন্দিরের দ্বারোদঘাটন এবং জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিধান অনুযায়ী সেটা করবেন পুরীর রাজেশ দ্বৈতাপতি।
এছাড়া দিঘার জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীকাল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশার কথা। অন্যান্য মন্ত্রীরা এখন এসে গিয়েছেন। আর আজ পুরীর মতো এখানেও সুদর্শন দেব, দেবী লক্ষ্মী, বিমলা ও সত্যভামাকে অধিষ্ঠিত করা হবে। আর রাধারমণ দাস জানান, মূল যজ্ঞের পর সন্ধ্যায় ফুলে সাজানো বিছানায় শয়ন দেওয়া হবে জগন্নাথ দেবকে। অক্ষয় তৃতীয়ার পূণ্যলগ্নে পাথরের বিগ্রহের জগন্নাথ দেব এবং রাধাকৃষ্ণর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাধারমণ দাস বলেন, ‘অক্ষয় তৃতীয়ার দিন প্রথমে ভগবানকে সোনা, রুপো এবং তামার তার দিয়ে বেঁধে সেই তারকে প্রধান পুরোহিতের কোমড়ে বাঁধা হবে। তারপর ঘট স্থাপন, কুণ্ড ও অবশেষে প্রতিবিম্ব।’