তাঁরাও জল ঢালতে শুরু করেন বালতি করে। দমকল বাহিনী সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আর সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। একই পরিবারের তিনজনের এভাবে মর্মান্তিক মৃত্যু হওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আগুনে দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু
আজ, রবিবার ভোররাতে উলুবেড়িয়ার একটি গৃহস্থ বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আর তার জেরে সেখানে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এই আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। বাড়িতে আগুন লাগার সময় সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। আর এই ঘুমন্ত অবস্থাতেই মা–বাবা এবং শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আবার অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তিও রয়েছেন একজন প্রৌঢ়া। এই গোটা ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। মহালয়ার পরেরদিনই এমন মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ রবিবার ভোররাতে এই গৃহস্থ বাড়িতে আগুন লাগে। আর তার জেরে মর্মান্তিক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পারিজাত দক্ষিণপাড়ায় বাড়িতে আগুন লেগেছিল। তখন অঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন বাবা, মা এবং শিশুসন্তান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। যখন আগুন নেভানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন সব শেষ। কারণ এই আগুন লেগেই তাঁদের সকলের মৃত্যু হয়। পরিবারে আছেন অপর এক প্রৌঢ়া। তিনি অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখন উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় দুর্গাপুজোর মুখে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই বাড়িতে থাকতেন পেশায় কাপড়ের কাটিং মিস্ত্রি ইয়াসিন মল্লিক, তাঁর স্ত্রী এবং ১০ মাসের শিশুসন্তান। তাঁরা সকলেই তখন ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। সেখানেই ছিলেন ইয়াসিনের মা’ও। তিনি বাড়িতে প্রৌঢ়া। হঠাৎ রাত ৩টে নাগাদ ঘরে আগুন লেগে যাওয়ায় কেউ কিছু টের পাননি। আর যখন টের পেলেন তখন গোটা ঘরটি আগুন ঘিরে ফেলেছে। অনেক চেষ্টা করলেও সেখান থেকে বাঁচতে পারেননি কেউ। ঘুমন্ত অবস্থাতেই চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে পড়েন। ঘরের মধ্যেই মৃত্যু হয় ইয়াসিন মল্লিক, তাঁর স্ত্রী মহিমা বেগম এবং তাঁদের শিশুসন্তানের। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন প্রৌঢ়া নুরজাহান বেগম।
কেমন করে আগুন লাগল? তবে এই আগুন কেমন করে লাগল সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। আগুন লেগেছে দেখে স্থানীয় মানুষজন সঙ্গে সঙ্গে উলুবেড়িয়া থানায় খবর দেন। প্রতিবেশীরা দমকলে খবর দেন। সেখানে ছুটে আসে পুলিশ। দমকলের একটা ইঞ্জিন এসে আগুন নেভাতে শুরু করলে তাতে হাত লাগান স্থানীয়রাও। তাঁরাও জল ঢালতে শুরু করেন বালতি করে। দমকল বাহিনী সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আর সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। একই পরিবারের তিনজনের এভাবে মর্মান্তিক মৃত্যু হওয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এমন ঘটনার পিছনে অন্য কারও হাত আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।