পুলিশের একাংশ সিআইএসএফ, বিএসএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলার বদনাম করার চেষ্টা করছে। নীচুতলার কিছু পুলিশ এই কাজে জড়িত। নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর এই ভাষাতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই তথ্য হাতে নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এই পুলিশকর্মীদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রামরেড’। যাঁরা অন্তর্ঘাত করছে বলে অভিযোগ। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে এই পুলিশ অফিসারদের সুন্দরবনে বদলির হুঁশিয়ারি দিলেন কুণাল ঘোষ। এই মন্তব্যের পরই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি।
সম্প্রতি কসবার কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে। তখন মেয়র ফিরহাদ হাকিম সরাসরি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন। আর তাঁর সেই বক্তব্যকে সমর্থন করেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। যদিও বিরুদ্ধ মত পোষণ করেন বিধায়ক মদন মিত্র। এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গকে সম্প্রতি মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি প্রতিবাদ সভা আয়োজন করে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। নন্দীগ্রামের সেই সভায় এসে পুলিশের ভূমিকা, রাজনৈতিক যোগ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে দেন কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন: শূন্যতা কাটাতে ‘পিকে চাই’ দাবি কমরেডদের, ‘লোক খুঁজছি’ বিজ্ঞাপন দিলেন সেলিম
পুলিশের কাজকর্ম নিয়ে রাজ্যের বহু মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তবে সবটাই নীচুতলার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। এই ক্ষোভই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ হিসাবে জমা পড়ে। যা গতকাল আছড়ে পড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পুলিশকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, ‘যাঁরা এখন রাজ্য সরকারে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন, দায়িত্ব কর্তব্য ভুলে অন্তর্ঘাত করছেন সেই সব বামপন্থী পুলিশ কর্মীদের বলছি, ২০২৬ সালের পর সুন্দরবনে বাঘ পাহারা দিতে পাঠানো হবে, তৈরি থাকুন।’ এই মন্তব্যেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
কুণাল ঘোষের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হলেও বহু সাধারণ নাগরিক এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। কারণ নীচুতলার পুলিশ কর্মীদের আচার–ব্যবহার এবং কাজ না করে বিপদে ফেলে দেওয়ার প্রবণতায় ক্ষুব্ধ আমজনতা। যদিও কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘চারদিক থেকে প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ এটা কেন করছে না, ওটা কেন করছে না। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এদের অধিকাংশই হচ্ছে আগের সিপিএম। ওরা মনে প্রাণে চায় রাজ্য সরকারের ক্ষতি হোক। ভিতরে থেকে অন্তর্ঘাত করছে। সিপিএমকে খুঁজে না পেয়ে বিজেপিকে মদত দিচ্ছে। প্রশাসনের মধ্যে থেকে দালালি করবেন? ব্যাগ গুছিয়ে রেখে দিন। সুন্দরবন বা কোচবিহার যেতে হবে। কাছাকাছি কোথাও হবে না।’