কদিন আগেই মৈপীঠের দেবীপুরে এক মহিলার বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল বাঘ। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল মৈপীঠ। আর এবার একইরকম ঘটনা ঘটল সেই মৈপীঠে। যা প্রত্যক্ষ করলেন মৈপীঠের বাসিন্দা অনুপম গিরি। শুক্রবার রাতে অনুপমবাবু বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন তিনি রাস্তায় হঠাৎ বাঘ দেখতে পেলেন। আতঙ্কে চিৎকার শুরু দেন। তাঁর ওই প্রবল চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। গ্রামবাসীরা জড়ো হতেই পালিয়ে যায় বাঘ। কিন্তু আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন অনুপম গিরি। আর এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর। কারণ সাধারণ মানুষকে সন্ধ্যাতেই বাড়িতে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। আর রাতে জঙ্গলে বাঘের হুঙ্কার শোনা গিয়েছে বলে জানান তাঁরা। নজরদারি চালাচ্ছেন বন দফতরের কর্মীরা।
এদিকে বাঘ আছে জানতে পেরেই কুলতলির বন দফতরের অফিসে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দা। সন্ধ্যায় কুলতলি বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। রাতে ওই এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। নজরদারি চালানো হয়। তবে এই বাঘ কোথা থেকে এল সেটা বুঝতে পারছেন না বন দফতরের কর্মীরা। এই বিষয়ে অনুপম গিরি জানান, শুক্রবার রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘটনাটি ঘটে। তখন অন্ধকারে দুটো চোখ জ্বলজ্বল করছিল। যা দেখতে পান তিনি। যা দেখে ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গত ৬ জানুয়ারি প্রথমবার বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির মৈপীঠ এলাকার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: ‘নির্বাচনকে মাথায় রেখে বাজেট, সাধারণ মানুষের কথা নয়’, ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিষেক
অন্যদিকে তারপরও বেশ কয়েকবার মৈপীঠে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছিল। এবার সশরীরে দেখা দিল দক্ষিণরায়। অতীতের সেই আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই আবার দেখা দিল দক্ষিণরায়। যা দেখে এখন আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামবাসীরা। এই পরিস্থিতিতে অনুপম বাবুকে রাতেই কুলতলি ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর দেওয়া হয় মৈপীঠ কোস্টাল থানায় এবং বন দফতরকে। ছুটে আসেন বন দফতরের কর্মীরা। রাতে গ্রামের নানা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রাখেন গ্রামবাসীরা। জেনারেটরও ভাড়া করে আনা হয় আলো জ্বালাতে। সারারাত গ্রাম পাহারা দিয়েছেন বনকর্মীরা।
আরও পড়ুন: ১২ লাখ পর্যন্ত আয়ে দিতে হবে না কোনও আয়কর, কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষণা নির্মলার
এছাড়া আজ, শনিবার সকালে বাঘটি গ্রামের আশেপাশে আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছেন বনকর্মীরা। তবে পায়ের ছাপ মেলায় বাঘ যে আছে সেটা বুঝতে পারছেন বন কর্মীরা। মানুষের জীবনের স্বার্থে তাই লাগাতার খোঁজ করা হচ্ছে। এত তাড়াতাড়ি বাঘ এক জায়গা থেকে অন্যত্র যায় না। সেই তথ্য মাথায় রেখেই খোঁজ শুরু হয়েছে। বন দফতরের কর্মীরা মনে করছেন, বাঘটি মাকড়ি নদী পেরিয়ে লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় চলে এসেছে। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, কেন ঘনঘন লোকালয়ে চলে আসছে বাঘ? জঙ্গলে কি খাবার মিলছে না? এই বিষয়ে এখনও বন দফতরের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।