সিঙ্গুরকে বিশ্বের 'জুয়েলারি হাব' হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের সাহায্যপ্রাপ্ত 'জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল'-র তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে দক্ষকর্মীর অভাব নেই। রয়েছে কারিগরি ঐতিহ্য। সেটাকে কাজে লাগিয়েই সিঙ্গুরকে ফ্যাশন ও কস্টিউম জুয়েলারির গ্লোবাল হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন 'জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল'-র চেয়ারম্যান বিপুল শাহ।
তিনি বলেছেন, ‘(জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল যে পরিকল্পনা করেছে), সেটার হাত ধরে সিঙ্গুরের নির্মাতারা (বিশ্বব্যাপী) ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে এবং বিশ্বস্তরে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে পারবেন। সিঙ্গুরে প্রায় এক লাখ দক্ষ বাঙালি কারিগর আছেন। যাঁরা স্থানীয় কারখানায় কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ কর্মী হলেন মহিলা। সিঙ্গুরকে রফতানির হাব হিসেবে গড়ে তোলা হলে স্থানীয় কুটির শিল্পের উন্নতি হবে।’
রেল, সড়ক, বিমান- সবদিক থেকেই পৌঁছানো যাবে সিঙ্গুরে
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সিঙ্গুরের ভৌগোলিক অবস্থানও ভালো। সিঙ্গুরের আশপাশেই পাঁচটি রেলওয়ে স্টেশন আছে। পাশেই আছে দু'নম্বর জাতীয় সড়ক। কলকাতা বিমানবন্দর থেকেও সিঙ্গুরের দূরত্ব বেশি নয়। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গরের দূরত্ব মেরেকেটে ৪০ কিলোমিটার। ফলে চটজলদি যে কোনও মাধ্যমে সিঙ্গুরে পৌঁছানো যাবে। সহজেই নিয়ে আসা যাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ। রফতানির কাজটাও সহজ হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
বাংলার স্বর্ণশিল্পীদের সুনাম আছে এমনিতেই
'জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল'-র আধিকারিক পঙ্কজ পারেখ জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে কাঁচামাল আমদানিকারীরাও থাকেন। ফলে আমদানির ক্ষেত্রে বাড়তি সহায়তা মিলবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। 'জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল'-র চেয়ারম্যান আবার জানিয়েছেন, কলকাতার কারিগরি শিল্পের একটা ঐতিহ্য আছে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গুরের 'জুয়েলারি হাব'-কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন 'জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল'-র চেয়ারম্যান।
তবে শুধু কলকাতা নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির মতো জেলায় প্রচুর সোনার কারিগর থাকেন। কেউ-কেউ কাজের জন্য কলকাতায় আছেন। কেউ-কেউ আবার ভিনরাজ্যেও কাজ করেন। বিশেষত পশ্চিম মেদিনীপুরের সোনার কারিগরদের ভারতে সুনাম আছে। সিঙ্গুরে (হুগলি জেলায় অবস্থিত) 'জুয়েলারি হাব' তৈরি হলে তাঁদের দক্ষতাও কাজে লাগানো যাবে। সবমিলিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা সফল করে তোলার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।