একসঙ্গে তিন রয়্যাল বেঙ্গল শাবকের মৃত্যু হয়েছে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গেল শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে। ঘাড়ের কাছে ভুলভাবে কামড় দেয় শাবকগুলির মা। আর মায়ের ওই ভুল কামড়ের জেরেই তিনটি শাবকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কদিন আগেই ওই তিনটি শাবকের জন্ম দেয় সাফারি পার্কের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রিকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রিকা নামটি রাখেন। সাফারি পার্ক সূত্রে খবর, রিকা ও তার তিন শাবককে নাইট শেল্টারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু জন্ম দেওয়ার দু’দিনের মাথায় তিন শাবকের মৃত্যু হল। শাবকদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় সরাতে গিয়ে ঘাড়ের ভুল জায়গায় কামড় দেয় মা রিকা। তাতেই মৃত্যু হল।
এই তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল শাবক জন্ম নেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে আসার পরিকল্পনা করেন বহু পর্যটক। এমনকী ভ্রমণ সংস্থাগুলি পর্যন্ত এই রয়্যাল শাবকের জন্মের কথা প্রচার করতে থাকে। এই ঘটনার পর সাফারি পার্কের ডিরেক্টর বিজয় কুমার বলেন, ‘রিকার ভুলেই তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শাবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘রিকা দ্বিতীয়বার তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। রিকারও একটু শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যেই অসাবধানতায় তিন শাবকের ঘাড়েই কামড় বসিয়ে দেয় মা। শাবকদের মৃত্যু হয়।’
আরও পড়ুন: ‘পরিশ্রমের দাম সবসময়েই শেষে পাওয়া যায়’, ঋতব্রতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা অভিষেকের
কদিন আগেই পাহাড়ে সফর করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনি সেখানকার চিড়িয়াখানায় ঘুরে আসেন। দুই চিতা শাবকের নাম রেখেছিলেন। আবার শীত পড়তেই শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে ভিড় শুরু হয়েছিল। সেখানে এমন একটা ঘটনার কথা জানতে পেরে মনমরা হয়ে পড়েন পর্যটকরা। কদিন আগেই বার্ধক্যজনিত কারণে কুনকি হাতি লক্ষ্মীর মৃত্যু হয় সাফারি পার্কে। এবার তিন রয়্যাল বেঙ্গল শাবকের একসঙ্গে মৃত্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে কর্তৃপক্ষকে। এই ঘটনা নিয়ে এখন পর্যটক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ফের কি আনন্দ পাওয়া যাবে? উঠছে প্রশ্ন।
তবে ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে সাদা বাঘ কিকার জেরে দুই শাবকের মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর। আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে একসঙ্গে তিন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শাবকের মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর কথায়, ‘অভিজ্ঞ মা বাঘরা সদ্যোজাত শাবকদের জন্মের পর অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করে না। সুরক্ষিত জায়গা বেছেই তারা প্রসব করে। রিকা এই বিষয়ে অনভিজ্ঞ বলেই এমন কাজ করেছে। সদ্যোজাত শাবকদের চামড়া খুবই নরম হয়। তাই দাঁত দিয়ে তোলার সময় শাবকের ফুসফুসে লেগে যায়। আর একজনের শ্বাসনালী ফুটো হয়ে যায়। তিন নম্বর শাবকের মাথার খুলিতে দাঁত লেগে যাওয়ায় একসঙ্গে মৃত্যু হয়েছে।’