উন্নয়নের কাজে বরাদ্দ অর্থ খরচের ক্ষেত্রে রাজ্যের বাকি সমস্ত জেলাকে পিছনে ফেলে দিল পূর্ব মেদিনীপুর। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের হিসাব অনুসারে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তরফে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সামগ্রিকভাবে সেই টাকার ৯১ শতাংশই খরচ করে ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুর। যা অন্যান্য সমস্ত জেলার তুলনায় বেশি। এমনকী, জেলার কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতি তো বরাদ্দ অর্থের ১০০ শতাংশই খরচ করেছে উন্নয়নের কাজে!
সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমুখী প্রকল্পে সব মিলিয়ে খরচ করা হয়েছে ২৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে রাজ্যের বাকি ২২ জেলাকে পিছনে ফেলে 'ফার্স্ট' হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর।
সদ্য সমাপ্ত আর্থিক বছরে জেলার উন্নয়নে যে কাজগুলি করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে - সাধারণ শৌচালয় নির্মাণ, পাকা রাস্তা ও কালভার্ট তৈরি, পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পগুলির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, নিকাশিব্যবস্থার আধুনিকীকরণ প্রভৃতি।
জেলার মোট ২৫টি ব্লকেই ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক দেবদুলাল বিশ্বাস। তাঁর বক্তব্য, একেবারে তৃণমূলস্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের শীর্ষে থাকা আধিকারিকদের মিলিত ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলেই এই সাফল্য় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। যে সাফল্য তাঁরা আগামী দিনেও ধরে রাখতে চান।
কাজের মূল্যায়নের নিরিখে দেখা গিয়েছে, সবথেকে বেশি উন্নয়ন হয়েছে - মহিষাদল, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম-২, ময়না, পটাশপুর-১, এগরা-১ এবং ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি অধীনস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে।
এছাড়াও, অন্য একাধিক পঞ্চায়েত সমিতির অধীনস্ত পঞ্চায়েতগুলির কোথাও বরাদ্দ অর্থের ৯৭ শতাংশ, তো কোথাও ৯৫ শতাংশ টাকা খরচ করা হয়েছে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করার জন্য। সব মিলিয়ে গোটা জেলায় গড়ে খরচ করা হয়েছে বরাদ্দ অর্থের ৯১ শতাংশ।
জেলার এই সাফল্যের জন্য জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকেই প্রধান কৃতিত্ব দিয়েছেন জেলার পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা শাসক অনির্বাণ কোলে।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, উন্নয়নের কাজে যাতে কোথাও কোনও খামতি না থাকে, তার জন্য সর্বস্তরের প্রশাসনিক প্রতিনিধি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন জেলাশাসক। কীভাবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, সেই বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি হয়ে যাওয়া কাজের পর্যালোচনা করা হয়েছে বারবার। নিয়মিত সেসবের তদারকি করেছেন জেলাশাসক নিজে। তার সুফল পেয়েছে গোটা জেলা।