দীর্ঘদিন ধরে সুগার এবং ব্লাড প্রেশারের সমস্যা। তবে সেই সমস্যা সমাধানে ডাক্তারি চিকিৎসা করাতে চাননি প্রবীণ দম্পতি। তার পরিবর্তে নিজেরাই বিভিন্ন গাছ-গাছালি থেকে ভেষজ ওষুধ তৈরি করতেন। আর নিয়মিত সেই ওষুধ খেতেন। কিন্তু, ঘরে তৈরি করা সেই ভেষজ ওষুধ ডেকে আনল ভয়ঙ্কর বিপদ। ভেষজ ওষুধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে ছটফট করতে করতে মৃত্যু হল প্রবীণ দম্পতির। এমনই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার কৈলাশনগরে। মৃত দম্পতির নাম হরবন্ধু দাস (৭১) ও মিনতি দাস (৬৫)।
আরও পড়ুন: কোনও ব্র্যান্ড নয়! জেনেরিক ওষুধ লিখতে হবে চিকিৎসকদের, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
দুজন অসুস্থ হয়ে পড়তেই তাঁদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে প্রবীণ দম্পতির পরিবারে।
জানা গিয়েছে, হরবন্ধু এবং মিনতি দুজনে স্থানীয় হীরালাল বাজারে দীর্ঘদিন ধরে সবজি বিক্রির ব্যবসা করতেন। সেইমতো সোমবার ভোরে সবজির দোকানে যাওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। দোকানে যাওয়ার পথে আচমকা দুজনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক বুঝে তাঁরা দোকানে যাওয়ার পথেই অবস্থিত মেয়ের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তারপরেই তাঁরা মেঝেতে পড়ে ছটফট করতে থাকেন। বমি করতে শুরু করেন দুজনে। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান দম্পতির মেয়ে এবং স্থানীয়রা। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
পারিবারিক এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোরে সবজির দোকানে যাওয়ার আগে তাঁরা ভেষজ ওষুধ খেয়েছিলেন। তা থেকে বিষক্রিয়ার কারণে দুজনে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, প্রতিদিন ভোরে উঠে দম্পতি ভ্যান নিয়ে প্রথমে সবজি কিনতে যান পাইকারি বাজারে। পরে সবজি কিনে এনে নিজেদের দোকানে বিক্রি করেন। তাঁদের মেয়ের বাড়ি মাইতির চক কালীনগরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতি নিজেরাই বাড়িতে ওষুধ তৈরি করতেন। বিভিন্ন ধরনের গাছের শিকড়, পাতা, ফল, ফুল সংগ্রহ করে রস দিয়ে তাঁরা ওষুধ তৈরি করতেন। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই ওষুধ খেয়ে আসছিলেন। এর আগে শরীরে অন্যান্য রোগ থেকে মুক্তি পেতেও নিজেদের তৈরি ওষুধ খেতেন। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তাঁরা ওষুধ খেয়ে বেরিয়েছিলেন। আর তারপরেই এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ খবর পেয়ে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।