শহর তো পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রয়েছেই। কিন্তু শহরাঞ্চল এবং গ্রামবাংলা কেমন আছে? এই প্রশ্ন উঠতেই পারে। কারণ কলকাতা শহরকে নিকাশি যন্ত্রণা এবং জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে কলকাতা পুরসভা নানা পদক্ষেপ করেছে। সুতরাং কলকাতা শহরে এসব সমস্যা নেই। কিন্তু শহরাঞ্চলে এবং গ্রামবাংলায় পুরসভা, মিউনিসিপালিটি, পঞ্চায়েত এসবের মধ্য দিয়ে কাজ হলেও আরও কিছু কাজ করা দরকার। যাতে শহরাঞ্চল এবং গ্রামবাংলা আরও বেশি করে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকে সেই সঙ্গে নিকাশি সমস্যার একদম সমাধান করা যেতে পারে। এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এবার কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সামনে নিয়ে আসছে।
কেমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, শহরাঞ্চলে নিকাশি ও জঞ্জাল থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় মানোন্নয়ন করতে রাজ্য সরকার এবার কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সামিল করার পরিকল্পনা করেছে। আইন অনুযায়ী, ৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন আছে এমন কর্পোরেট সংস্থাগুলি তাদের সিএসআর প্রকল্পের আওতায় জনস্বার্থে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে। এবার সেই কাজের আওতায় জঞ্জাল মুক্ত করা এবং তার সঙ্গে নিকাশি সমস্যাকেও যুক্ত করার কথা ভেবেছে। ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি এবং কামারহাটি পুরসভা এলাকাতে সিএসআর প্রকল্পে নিকাশি পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়েছে।
আর কী ভাবা হচ্ছে? শহরাঞ্চলের অন্যান্য পুরসভা এবং গ্রামবাংলাতেও এই একই মডেল ফলো করে দুই বিভাগে কাজ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর। কর্পোরেট সংস্থাগুলির সিএসআর প্রকল্পের জন্য আছে পোর্টাল। আর সেই পোর্টালে নিকাশি ও জঞ্জালের কাজকে যুক্ত করা হবে। যাতে আগ্রহী কর্পোরেট সংস্থাগুলি এই প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে। যারা ইচ্ছা প্রকাশ করবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আর কাজটা করিয়ে নেওয়া হবে। তার ফলে শহরাঞ্চল এবং গ্রামবাংলা ঝাঁ–চকচকে হয়ে উঠবে। এই ভাবনাকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? সিএসআরের মাধ্যমে কাজ হবে। আর রাজ্য সরকার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট নিখরচায় তৈরি করে দেবে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা সেটার উপর রাজ্য সরকার নজরদারি চালাবে। আর এই প্রকল্প বিষয়ক আর্থিক লেনদেনের সমস্ত দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট কর্পোরেট সংস্থাগুলির উপর। এছাড়া জনস্বার্থে পরিকল্পিত আরও কয়েকটি প্রকল্প সিএসআরের মাধ্যমে করা হবে। তার জন্য সেই বিষয়টিও পোর্টালে তোলা হবে। এই সমস্ত বিষয়ে পুরসভাগুলিকে তাদের মতামত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন রাজ্য সরকারের ৫৮টি দফতরের ১ হাজার ২৮৩টি প্রকল্প সিএসআর প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে যুক্ত করা হয়েছে।