নরেন্দ্র মোদী সরকারের জমানায় শিক্ষাক্ষেত্রে কখনও গবেষণা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া, কখনও প্রান্তিক শ্রেণির পড়ুয়াদের বৃত্তি বন্ধ দেখেছে গোটা দেশ। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন ভূমিকার বিপরীত পথেই হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তফসিলি জাতি, উপজাতি, ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত পড়ুয়াদের প্রি–ম্যাট্রিক স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে গরিব পড়ুয়ারা যাতে বৃত্তি থেকে বঞ্চিত না হয়, তাই রাজ্যের কোষাগার থেকে তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকী আগামী আর্থিক বছরের বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করা হবে। এই শ্রেণির যে পড়ুয়াদের বই কেনার জন্য এককালীন বৃত্তি ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? নবান্ন সূত্রে খবর, তফসিলি জাতি, উপজাতি বা ওবিসি শ্রেণিভুক্ত কোনও পড়ুয়ার পারিবারিক আয় বার্ষিক আড়াই লক্ষ টাকার কম হলে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। সেটাই চালু রাখতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে এখন শুধু নবম–দশম শ্রেণির যোগ্য পড়ুয়ারাই এই বৃত্তি পাবে। বঞ্চিত হতে হবে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের। সেটা যাতে না হয় তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রের বন্ধ করে দেওয়া প্রকল্প চালাবে রাজ্য সরকার।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই খাতে এতদিন কেন্দ্রীয় সরকার দিত ৭৫ শতাংশ টাকা। বাকি ২৫ শতাংশ টাকা দিত রাজ্য সরকার। এবার থেকে রাজ্যই পুরো ব্যয়ভার বহন করবে। বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য যে পড়ুয়ারা বাড়িতে থেকে পড়াশুনো করে, তারা প্রতি মাসে ২২৫ টাকা এবং আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা ১০ মাসের জন্য প্রতি মাসে ৫২৫ টাকা করে পেয়ে থাকে স্কলারশিপ বাবদ। বই কেনার খরচ বাবদ এককালীন এই দুই ধরনের পড়ুয়া যথাক্রমে ৭৫০ এবং ১০০০ টাকা করে পায়। এটাই যারা ৭৫০ টাকা পায়, তাদের ওই বৃত্তি ৫০ টাকা বাড়ানো হচ্ছে। আর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার আগেই চালু করেছে ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্প। তাতে রাজ্যের প্রায় ৪৫ লক্ষ পড়ুয়া এই প্রকল্পের আওতাধীন।
ঠিক কী বলছেন মন্ত্রী? কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার জেরে রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট খারাপ। কিন্তু প্রান্তিক পরিবারের পড়ুয়াদের প্রতি বঞ্চনা মেনে নিতে না পেরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যা কার্যত মাস্টারস্ট্রোক। এই বিষয়ে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেন, ‘কেন্দ্র বহু ক্ষেত্রে বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই বাংলার মানুষ সুরক্ষিত আছে।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক http://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup