রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে ডাক্তারি পড়ুয়াদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। শুক্রবারের সেই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কমিটিতে রয়েছেন ৫ জন সদস্য। আগামী বুধবার উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেবে কমিটি।
আরও পড়ুন: মালদা মেডিক্যালে আগুন, আতঙ্কে হুড়োহুড়ি রোগীদের, এড়ানো গেল বড়সড় বিপদ
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটি আয়োজক এবং বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য শুনবে। তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে। উল্লেখ্য, পড়ুয়াদের দুপক্ষই এই ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ফলে পুলিশও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঠিক কী ঘটেছিল এবং কেন এই ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে বিষয়টির নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পড়ুয়াদের একটি দল মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে রক্তদান শিবিরের আয়োজনের অনুমতি চেয়েছিল। তাতে অনুমতি দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে পড়ুয়াদের দলটি একটি ব্যানারে দাবি করে ‘এমএমসিএইচ স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ এই শিবিরের আয়োজন করেছে। তাতেই আপত্তি জানায় পড়ুয়াদের অন্য গোষ্ঠী।
তাঁদের দাবি, বর্তমানে এই ধরণের কোনও কাউন্সিল মনোনীত বা নির্বাচিত হয়নি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পড়ুয়াদের ওই গোষ্ঠী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। অভিযোগ, রক্তদান শিবির চলার সময় আয়োজক দলের সদস্য এক ছাত্রী এবং একজন স্নাতকোত্তর পড়ুয়াকে তাঁরা গালিগালাজ করেন। হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের উদ্দেশ্যে অবমাননাকর মন্তব্য করেন বিপক্ষ পড়ুয়ারা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে দু'পক্ষ কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ উভয়ের কাছেই অভিযোগ দায়ের করে।
বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, তাঁদের এক সদস্যকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। এর পাশাপাশি উভয় গোষ্ঠী রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের কাছেও লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে।
শনিবার দু'পক্ষ কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে। তারপরেই পুরো ঘটনাটি তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অধ্যক্ষ জানান, তিনি দু'পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। যা হয়েছে সেটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তাই, ঘটনাটি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, হাসপতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, হাসপাতাল হল চিকিৎসা এবং শান্তির জায়গা। কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিষয়টি সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।