রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে সোনামুখী গার্লস হাইস্কুলের কৃতি ছাত্রী সৃজিতা ঘোষাল। পাশাপাশি বাংলায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন সৃজিতা ঘোষাল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। আগামী দিনে এই মেধাবী ছাত্রী পড়তে চায় ইঞ্জিনিয়ারিং। তাঁর বাবা একটি হাইস্কুলের শিক্ষক। তাই মেয়ের এই দারুণ ফলাফলে অত্যন্ত খুশি তিনি। তবে সৃজিতা খুব কম বয়সেই মা হারা হন। তখন আঁধার নেমে আসে তাঁর জীবনে। তারপর নিজেকে সামলে এই সৃজিতাই এবার উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকায় চতুর্থ হয়েছেন। বাঁকুড়ার সোনামুখী গার্লস হাইস্কুলে এখন খুশির হাওয়া। কষ্টের ফল পেলেন সৃজিতা।
এদিকে ছোট থেকে স্কুলশিক্ষক বাবার শিক্ষায় বেড়ে উঠেছেন সৃজিতা। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সৃজিতার বাবাই ছিলেন তাঁর কাছে বিশেষ শিক্ষক। কারণ তিনিই পরীক্ষা নেওয়া থেকে শুরু করে সৃজিতাকে সাজেশন দেওয়া সবই করিয়েছেন। আর তাতেই যেন বাজিমাত হয়েছে। সৃজিতার মা প্রয়াত হওয়ার পর সমস্ত সমস্যা নিজের উপর নিয়েছিলেন সৃজিতার বাবা। আর মেয়েকে তৈরি করে দিয়েছিলেন পড়াশোনার পরিবেশ। তাই তো আজ মেয়ের এই সাফল্যে আনন্দিত বাবা বলেন, ‘স্কুলজীবন শুরু হওয়ার থেকেই ও পড়াশোনায় ভাল। কখনও আলাদা করে কিছু বলতে হয়নি। কিন্তু মেধাতালিকায় স্থান দখল করবে, সেটা আশা করিনি।’
আরও পড়ুন: আবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পাকিস্তানে কি আরও বড় আঘাত হবে?
অন্যদিকে আজ এমন অপ্রত্যাশিত ফলাফল করে নিজেও আনন্দিত সৃজিতা ঘোষাল। তিনি ভাল ফল করার জন্য পরিশ্রম করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু এমনটা হবে সেটা ভাবতে পারেননি সৃজিতাও। তাই তো নাম ঘোষণার পর কিছুক্ষণ থম মেরে গিয়েছিলেন। বিশ্বাস করতে পারেননি। ঠিক শুনছেন তো? এই প্রশ্নই জেগেছিল মনে। সংবাদমাধ্যমে উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল কথা বলার সময়। তাই তো সৃজিতার বক্তব্য, ‘বাবা যেটা বলল, আমারও একই প্রতিক্রিয়া। ভাল ফল আশা করেছিলাম। কিন্তু মেধা তালিকায় জায়গা হবে সেটাটা ভাবিনি।’
কেমন করে এমন সাফল্য এল? সারাদিন কি পড়তেন? পড়াশোনার ফাঁকে কী করতেন সৃজিতা? এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন সৃজিতা অকপটেই। সৃজিতার কথায়, ‘আমি পড়তে ভালবাসি। কিন্তু কোনও রুটিন মেনে পড়িনি। যখন পড়তাম তখন সেটা মন দিয়ে করতাম। আর বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করতাম। বাবা আমার আশ্রয়। কিন্তু মনের কথা ভাগ করতাম বন্ধুদের সঙ্গেই। ইঞ্জিনিয়র হতে চাই। আমার পছন্দের বিষয় ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন। পড়ার ফাঁকে ওয়েব সিরিজ দেখতাম। তাতে ক্লান্তি কাটত।’