এখন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন বেশি করে হয়ে উঠেছে দিঘা। কারণ দুটি। এক, সমস্ত স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে। দুই, দিঘায় গড়ে উঠেছে জগন্নাথ মন্দির। তাই সেখানে ভিড় উপচে পড়ছে। হোটেলগুলিতে জায়গা নেই বললেই চলে। এখান থেকে পুজো দিয়ে সমুদ্রসৈকতে স্নান করে মন্দারমণিতে চলে যাচ্ছেন বহু পর্যটক। ভিড় এড়িয়ে নিরিবিলি সময় কাটাতে যাচ্ছেন পর্যটকরা। এই আবহে এবার একজন পর্যটক কোমরে লোডেড রিভলবার নিয়ে এলেন দিঘায়। তারপর সেখান থেকে গেলেন মন্দারমণিতে। এই খবর গোপন সূত্রে পেয়ে কড়া নজর রাখছিল প্রশাসন। আর সেই নজরদারির জেরেই এবার হাতেনাতে ধরা পড়লেন এক পর্যটক।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ মন্দারমণির একটি হোটেলে থাকা ওই পর্যটকের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। আর ওই পর্যটককে গ্রেফতার করেছে মন্দারমণি কোস্টাল থানার পুলিশ। সোমবার ওই পর্যটককে গ্রেফতার করতেই সমস্ত ঘটনা সামনে চলে আসে। এখন ওই পর্যটককে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। তার কাছ থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল এবং ১২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেমন করে ওই পর্যটকের কাছে লোডেড রিভলবার এল? কেন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হোটেলে এবং পথে ঘুরছিলেন ওই পর্যটক? তা জানতেই জেরা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সামশেরগঞ্জে আবার বিস্ফোরণ, হাত উড়ে গেল শিশুকন্যার, উদ্ধার বিপুল তাজা বোমা
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই পর্যটক প্রথমে দিঘায় আসেন। তারপর সেখানে ঘুরে মন্দারমণি যান। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পরিকল্পনা করে পুলিশ। সেই পরিকল্পনা মতো এগোতেই ওই পর্যটক ধরা পড়ে যায়। আর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত পর্যটকের বাড়ি মালদহের মোথাবাড়িতে। পেশায় পোলট্রি ব্যবসায়ী। ওই পর্যটকের নাম কৌশিক রায়। পরিবার নিয়ে গত রবিবার মন্দারমণিতে বেড়াতে এসেছিলেন। তার আগে সৈকত শহর দিঘাতেও ঘুরে যান কৌশিক রায়। এই ঘটনার পর গ্রেফতার হওয়া কৌশিক রায়কে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিন খারিজ করেন।
একইসঙ্গে কাঁথি মহকুমা আদালত ধৃত কৌশিক রায়কে চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ঘটনা সামনে আসতেই দিঘা–মন্দারমণিতে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। এবার কি মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হবে? উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর, দিঘার মতো পর্যটন স্থানে অনেক হোটেল সংগঠন আছে। সবাই নিয়ম মেনে চলে সে কথা বলতে পারব না। তবে আমরা হোটেল মালিকরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনেই চলি। এই ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে।’ আর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘আরও কড়া করা হবে নজরদারি। যাঁরা পুলিশের নির্দেশ মেনে চলছে না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’