একে অতি ভারী বৃষ্টির দাপট। তার উপর ডিভিসি ও দুর্গাপুর ব্যারেজ অতিরিক্ত মাত্রায় জল ছেড়েছে। সেকারণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে একাধিক জেলা। হাওড়া জেলা থেকে শুরু করে বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দল নামানো হয়েছে। বাহিনীর কর্মীরা দুর্গত এলাকাগুলিতে লাইফ বোট নিয়ে তীক্ষ্ণ নজরদারি চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে ড্রোন দিয়ে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোয় নজরদারি চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। জানা গিয়েছে, ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে দুর্গাপুর ব্যারেজের উপর চাপ পড়েছিল। সেই কারণে দুর্গাপুর ব্যারেজে জল ছাড়ার পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বড়জোড়া, সোনামুখী, পাত্রসায়র ও ইন্দাস ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন করে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওদিকে ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টির ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজের জল বিপদসীমার মাত্রা অতিক্রম করেছে৷ যে কোনও দুর্ঘটনা এড়াতে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিভিসি৷ সেইমতো রবিবার দুপুর পর্যন্ত ধাপে ধাপে ১,৫০,৫৭৫ কিউসেক জল ছেড়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ৷শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জল ছাড়ার পরিমাণ কমে ৯১ হাজার কিউসেকে দাঁড়িয়েছিল। আশা করা হয়েছিল, দামোদর থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কমবে। কিন্তু তা উল্টে বেড়ে যাওয়ায়, চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলা প্রশাসনের কপালে। জলস্তর বাড়ার কারণে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতা ব্লকের একাধিক এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে। আমতার কিছু এলাকায় নতুন করে জল ঢুকেছে। দুর্গত এলাকার পাশাপাশি নতুন করে যে সব এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনগুলি। জলের তলায় চলে গিয়েছে অসংখ্য কালভার্ট ও দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তা। এই সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজের সেচ দফতরের আধিকারিক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে আরও জল ছাড়া হলে, হুগলির উদয়নারায়ণপুর, আমতা, খানাকুল প্রভৃতি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে।