মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার মাহাদিয়া গ্রামে এক কোয়াক ডাক্তারের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার দুপুরে নিজের ঘর থেকে গলার নলি কাটা অবস্থায় উদ্ধার হয় আশিস মুখোপাধ্যায় (৪৬) নামের ওই ব্যক্তির দেহ। ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। (আরও পড়ুন: কসবা কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে সামনে শিউরে ওঠার মতো বর্ণনা, ৩ঘণ্টা ২০ মিনিটে কী কী ঘটে)
আরও পড়ুন: প্রেমে প্রত্যাখ্যান, বাড়িতে ঢুকে কিশোরীকে খুন, পরে উদ্ধার যুবকের দেহ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আশিসবাবু পাড়ার মধ্যেই নিজের বাড়িতে একটি চেম্বার চালাতেন। দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দেখে ওষুধ দিতেন। শুক্রবার সকালে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি ঘর থেকে না বেরোনোয় সন্দেহ হয় পরিবারের। অনেক ডাকাডাকির পর সাড়া না মেলায় পড়শিদের ডেকে ঘরের দরজা ভাঙা হয়। তারপরই চোখে পড়ে ভয়ানক দৃশ্য। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর, গলার নলি কাটা। দেহের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি রক্তমাখা বঁটি। ঘরের মেঝেতে চারদিকে রক্তের দাগ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অত্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এই মৃত্যু তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। (আরও পড়ুন: গলায় কামড়, যৌনাঙ্গে ক্ষত, সামনে এল কসবা কাণ্ডে নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্ট)
আরও পড়ুন: কসবা কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে রয়েছে সাক্ষী, দাবি নির্যাতিতার, কে সেই ব্যক্তি?
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আশেপাশের লোকজন ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা না কি ঠান্ডা মাথায় খুন। পরিবার সূত্রে খবর, প্রায় ২০ বছর আগে আশিসবাবু ভালোবেসে বিয়ে করেন কৃষ্ণা মুখোপাধ্যায়কে। তবে দাম্পত্যে সমস্যা তৈরি হয়। প্রায় পাঁচ বছর আগে স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যান। সেই থেকে ছেলেকে নিয়ে তিনি আলাদা থাকতেন। দশম শ্রেণির ছাত্র ওই ছেলেই বাবার সঙ্গে থাকত। ঘরে থাকতেন আশিসবাবুর বৃদ্ধা মা পূজিতা দেবীও।
পরিবারের দাবি, স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন আশিসবাবু। কাজও ছেড়ে দেন। পরে বাড়িতেই চেম্বার চালু করেন। যদিও গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন, এমন ঘটনা কেউ কল্পনাও করেননি। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, দেহে যেভাবে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তা সন্দেহজনক। আত্মহত্যার পাশাপাশি খুনের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য চণ্ডীচরণ ঘোষ জানান, এর আগে তিনি কিছুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তবে এবার ঘটনাটা ভিন্ন। পুলিশ তদন্ত করলেই আসল সত্য বেরোবে। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিবার ও গ্রামবাসীরা চাইছেন, পুলিশ দ্রুত সত্য উদঘাটন করুক।