ক্লাইভ হাউস বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এএসআইকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। উত্তর চব্বিশ পরগনার দক্ষিণ দমদমে রাষ্ট্রগুরু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক ভবনটি একসময় লর্ড ক্লাইভের বাসভবন ছিল। তিনিই ছিলেন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির প্রথম ব্রিটিশ গভর্নর। ভবনটির সংস্কারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বলেছে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: চিড়িয়াখানার জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত, বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে
ক্লাইভ হাউস সংস্কারের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।মামলা ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানিতে আদালত এএসআইকে ভবনের বর্তমান অবস্থা জানাতে এবং কীভাবে এটি সংস্কার ও সংরক্ষণ করা যেতে পারে, তা জানাতে বলেছে। জানা যায়, ২০০০ সালে এএসআই এই ভবনটি নিজদের অধীনে নেয়। ১৯৫৮ সালের আইনের অধীনে এটিকে একটি সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে তার আগে পর্যন্ত ভবনটি প্রায় অবহেলিতই ছিল।
আবেদনকারীদের আইনজীবীরা আদালতে জানান, ক্লাইভ হাউসের ভিতরে এখনও প্রায় ২০ থেকে ২৫টি পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং সেখানে বিনা অনুমতিতে অবৈধভাবে নির্মাণ কাজও হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, ভবনটি এখন এতটাই দুর্বল যে তা যেকোনও সময় ধসে পড়তে পারে।এএসআই-এর আইনজীবীও মামলার পক্ষে সায় দেন। তিনি জানান, এই ভবনের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই একে রক্ষা করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ক্লাইভ হাউস একটি পুরনো মাটির উঁচু জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে খোঁড়াখুঁড়ি করে অনেক প্রাচীন মাটির পাত্র আর ঐতিহাসিক জিনিস পাওয়া গিয়েছে। এসব আবিষ্কারের পর জায়গাটি আলোচনায় আসে। এএসআই শুধু বাড়িটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়নি, তারা এখানে খনন কাজও শুরু করে। যার ফলে কলকাতার ইতিহাসের প্রাচীনতম বসতিগুলির হদিস পাওয়া যায়। ব্রিটিশ অফিসারদের লিখিত বিবরণীতে এই বাড়িটির উল্লেখ রয়েছে। রবার্ট ওর্ম সম্ভবত ১৭৯৮ সালে ‘এ হিস্ট্রি অফ মিলিটারি ট্রানজ্যাকশনস অফ দ্য ব্রিটিশ নেশন ইন ইন্দোস্তান’ নামে একটি বইয়ে এই বাড়িটির প্রথম উল্লেখ করেছিলেন। ১৮৯১ সালে আরসি স্টার্নডেল এই ভবন সম্পর্কে লিখেছিলেন। তিনি এটিকে বাংলার প্রাচীনতম ভবনগুলির মধ্যে একটি বলে উল্লেখ করেছিলেন।