বামফ্রন্ট সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রাশিয়া, চিন কিংবা ভিয়েতনামে কিছু ঘটলে এই রাজ্যে সিপিএম নেতারা পথে নেমে বামপন্থার উপর আক্রমণ নেমে আসছে বলে সোচ্চার হতেন। অনেকে তাই রসিকতা করে বলতেন, রাশিয়া–চিন–ভিয়েতনামে বৃষ্টি হলে আলিমুদ্দিনের নেতারা ময়দানে ছাতা খুলে দাঁড়ান। এবার একইরকম পরিস্থিতিতে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করলেন সিপিএম নেতারা বলে সূত্রের খবর। এখন পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে। তাই এই ইস্যুতে পথে নামা উচিত বলে কিছু নেতার মত। তবে বেশিরভাগ সিপিএম নেতাই এই ইস্যুতে পথে নামার ক্ষেত্রে দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার থেকে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দলের আরও ‘সক্রিয়’ হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছে সিপিএমের একাংশ নেতারা।
এখন শুরু হয়েছে সিপিএমের জেলা সম্মেলনের প্রক্রিয়া। সিপিএম সূত্রে খবর, এই সম্মেলনে চারটি জেলার প্রতিনিধিদের আলোচনায় উঠে আসে বাংলাদেশ ইস্যু। আর প্রশ্ন তোলা হয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগকে সামনে রেখে রাস্তায় নামা হল না কেন? যেসব নেতারা এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের মতে, দলের বক্তব্যে স্পষ্ট কিছু উঠে আসছে না। তার জন্যই প্যালেস্টাইন ও বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত টেনে সিপিএমকে ‘মুসলিমপন্থী’ বলে তকমা দিচ্ছে বিজেপি–সহ অন্যান্যরা। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব এই প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: অভিনেত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ, আদালতের মুহুরি গ্রেফতার
প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রভাব এই রাজ্যে অনেক বেশি। সেখানে সিপিএম কেন কেন্দ্রীয়ভাবে বড় প্রতিবাদ করল না? সংখ্যালঘু প্রশ্নে বিজেপির ‘দ্বিচারিতা’ সামনে আনা দরকার। কিন্তু সিপিএমের আর একটা অংশ বলছে, বাংলাদেশের ঘটনায় বিজেপির সঙ্গে বামেদের অবস্থান এক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সম্মেলনে ব্যাখ্যা দেন, এই সমালোচনা যথার্থ নয়। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে মৌলবাদী আক্রমণের স্পষ্ট নিন্দা এখানকার রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সিপিএমের পলিটব্যুরোই প্রথম করেছে। প্রধানমন্ত্রী মুখ খোলেননি! ধর্মের অনুপ্রবেশ এবং মৌলবাদী শক্তির বিরোধিতা করাই সিপিএমের ঘোষিত অবস্থান।