সিতাইয়ের গিরিধারী নদীর উপরে নেতাজি সেতু তৈরির কাজ ১৮ মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় শেষ হতে চললেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। তাই সাধারণ মানুষজনকে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে ঝুঁকির যাতায়াত করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নেতাজি সেতু না হওয়ার জেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চামটা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবুয়া, তামাগুড়ি, নাকারজান গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার বাসিন্দা। এই নিয়ে সকলেই সাংসদের কাছে উত্তর জানতে চান। অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই লরির ভারে ভেঙে পড়েছিল ওই লোহার সেতুটি।
২০১৭ সালে ভেঙে পড়েছিল সেতুটি। তখন নতুন করে পাকা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় কোচবিহার জেলা পরিষদ। বরাদ্দ করা হয় ৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু হলেও এত ঢিমেতালে চলে যে কাজ শেষ হয়নি এখনও। গ্রামের মানুষজনের অভিযোগ, মাসে দু’দিন শ্রমিকরা কাজ করত। আর তারপর চলে যেত। তাই অধিকাংশ সময় কাজ বন্ধ ছিল। সিতাই উপনির্বাচনের আগে কাজ শুরু হলেও একই ছবি সামনে এসেছে। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন: শাক–সবজির দাম যেন আর না বাড়ে, প্রত্যেক বাজারে গিয়ে বার্তা দিচ্ছে টাস্ক ফোর্স
স্থানীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই প্রায় ৭ বছর কেটে গিয়েছে। এখনও নতুন সেতু তৈরি হয়নি গিরিধারী নদীর উপর। একমাস আগে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, কোচবিহার পঞ্চায়েত সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। এই সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি। সুতরাং এখনও বিআর চাতরা গ্রামের সঙ্গে চামটা গ্রাম পঞ্চায়েতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সাহিদর মিয়াঁর বক্তব্য, ‘আমার জমিতে সেতু তৈরির সামগ্রী রাখা হবে বলেছিল। টাকাও দেবে বলেছিল। কিছুই হয়নি।’
তাছাড়া গিরিধারী নদীর একদিকে বাজার, স্কুল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। অপরদিকে আছে তিনটি গ্রাম। সাধারণ মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীরা বাধ্য হয়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। তাতে ঝুঁকি থাকলেও এটাকেই মেনে নিতে হয়েছে। বর্ষায় খেয়া চলে। পারাপার করার জন্য তখন মাথাপিছু ১৫ টাকা দিতে হয়। ছাত্রছাত্রীদেরও ছাড় দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। এই নেতাজি সেতু গড়ে না ওঠায় তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা কমিটির সদস্য শুভ্রালোক দাস। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মনের কথায়, ‘দ্রুত কাজটি শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’