বিনিয়োগ করলেই ফেরত পাওয়া যাবে মোটা অঙ্কের টাকা। এমনই প্রলোভনে পা দিয়ে একটি চিটফান্ডে টাকা রেখে প্রতারণার শিকার হলেন বহু মানুষ। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ১ নম্বর ব্লকের কুদিতে। মঙ্গলবার রাতে চিটফান্ড সংস্থার এক এজেন্টকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আমানতকারীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্ত এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সেনার পরিশ্রমী চাকরিতে বিরক্ত, বাহিনী থেকে পালিয়ে চিটফান্ডে যোগ, আটক ৪ জওয়ান
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম রঞ্জন পান্ডা। অভিযোগ উঠেছে, রঞ্জন এইচডিএফএক্স নামে ওই সংস্থার নামে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছেন। এই সংস্থার মাধ্যমে টাকা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করা হবে বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত। আর এভাবেই বহু মানুষের কাছ থেকে তিনি প্রচুর টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। এগরার বাসিন্দা শঙ্কর দাস ও প্রশান্ত পান্ডা এই চিটফান্ড সংস্থায় টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
প্রশান্ত পান্ডার অভিযোগ, তিনি দেড় বছর আগে রঞ্জনকে টাকা দিয়েছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল, এই টাকা বাবদ প্রতি মাসে ৮ শতাংশ লভ্যাংশ পাবেন। আর সেই সঙ্গে যখন খুশি তিনি আসল টাকা তুলে নিতে পারবেন। কিন্তু, দেড় বছর হয়ে যাওয়ার পরেও লভ্যাংশ পাননি। এমনকী এখন আসল টাকাও তাঁকে ফেরানো হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমি বারবার রঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তাঁর বাড়িতে গিয়েছি। কিন্তু, তিনি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এদিন তাঁকে হাতেনাতে ধরতে পেরেছি।’ প্রশান্তর আরও অভিযোগ, এইচডিএফএক্স কোম্পানির নাম করে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে এই কোম্পানি ব্যাপক প্রতারণা চালাচ্ছে। এখন তাঁরা চাইছেন তাঁদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
অভিযোগ উঠছে, এই সংস্থার কিছু এজেন্ট গ্রামের সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন রকমভাবে লাভের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা তুলছেন। প্রথম প্রথম কিছু টাকা ফেরত দিলেও পরবর্তীকালে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। বালিঘাই, এগরা, কুদি, কাঁথি, রামনগর- সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই কোম্পানির নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর পিছনে অনেক অনেক বড় বড় মাথা রয়েছে। এখন বার বার এমন ঘটনার পরেও সাধারণ মানুষ কেন সচেতন হচ্ছেন না? তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আপাতত পুলিশ ও প্রশাসন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন আমানতকারীরা। যদিও এই প্রতরণা চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড অভিযুক্ত রঞ্জন পাণ্ডা অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করেননি। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।