সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় শুক্রবার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর এলাকার সুতি এবং সমশেরগঞ্জ। এই আবহে গতকালই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসএফের সাহায্য চেয়েছিল জেলা প্রশাসন। গতকাল হিংসা ঠেকাতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হিংসার শিকার হয়েছিল পুলিশ। জখম হয়েছিলেন ফারাক্কার এসডিপিও মনিরুল ইসলাম খান। তবে গতকাল রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে বলে জানায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছিল। এদিকে বার্তাসংসংস্থা এএনআই-এর ভিডিয়োতে দেখা যায়, গতরাতে বিএসএফ মোতায়েন ছিল জঙ্গিপুরের বিভিন্ন জায়গায়। এমনকী আজ সকালেও বিএসএফ জওয়ানদের টহল দিতে দেখা যায় এলাকায়। (আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে রাজ্যের মন্ত্রী, হামলা-কটাক্ষ MP-দের! WAQF প্রতিবাদে কি চাপে TMC?)
আরও পড়ুন: কলকাতায় বাস থেক গেরুয়া পতাকা খোলানোর অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন কমিশনার, বললেন…
এর আগে শুক্রবার পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। রেল স্টেশন থেকে শুরু করে জাতীয় সড়ক জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল ওয়াকফ প্রতিবাদীরা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়েছে বিএসএফ। অপরদিকে গুজব ছড়ালে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ। এদিকে বিজেপির দাবি, আমতলা থেকে মুর্শিদাবাদ, সর্বত্রই পুলিশ 'মার খাচ্ছে'। এই আবহে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে গেরুয়া শিবির। জানা যায়, গতকাল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি করে বিক্ষোভকারীরা। দাবি করা হয়েছে, গতকাল পুলিশ-জনতার খণ্ডযুদ্ধে জখম ফরাক্কার এসডিপিও মনিরুল ইসলাম খান। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। লাঠিচার্জও করে পুলিশ। এরপরে সাজুরমোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি বোমা বর্ষণ করে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা। এর মাঝেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেছিল সেখানে। তবে ওয়াকফ আন্দোলনকারীদের রোষ আরও বাড়লে অনেক পুলিশকর্মীকেই প্রাণ বাঁচাতে মসজিদে আশ্রয় নিতে হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। (আরও পড়ুন: 'ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির বেদিতে শাসনব্যবস্থার বলি', WAQF ইস্যুতে হামলা BDO অফিসে)
আরও পড়ুন: স্টেশন-জাতীয় সড়কে ছড়িয়ে তাণ্ডবের চিহ্ন, এখন কেমন আছে মুর্শিদাবাদ? দেখুন ভিডিয়ো
এই সবের মাঝে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফ ডিআইজি জনসংযোগ আধিকারিক নিলোৎপাল কুমার পাণ্ডে বলেন, 'মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোঝনী বিলের প্রতিবাদে বিশাল জমায়েত হয়। পরবর্তীতে সেই জমায়েতকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। জেলা প্রশাসন তখন বিএসএফের কাছে সাহায্যের আবেদন জানায়। বিএসএফ সেই আবেদনা সাড়া দিয়ে বাহিনী পাঠিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে সাহায্য করবে বাহিনী।' (আরও পড়ুন: ওয়াকফ প্রতিবাদের নামে তৃণমূল সাংসদের অফিস ভাঙচুর, খলিলুরকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ!)
আরও পড়ুন: গোপন আলোচনা হয় রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর, মুর্শিদাবাদ হিংসার পর মুখ্যসচিব বলেন…
এদিকে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাজ্য পুলিশ দাবি করেছে, বর্তমানে সুতি এবং সমশেরগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'সুতি ও জঙ্গিপুরের সামসেরগঞ্জের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ বিশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দিয়েছে। জাতীয় সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যারা হিংসার ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা সমস্যা তৈরি করেছে তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। যারা ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে কান দেবেন না, শান্ত থাকুন।'