বাবা মায়ের পর মৃত্যুর পর থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু, সেই হাসপাতালের মধ্যেই চোর সন্দেহে বেধড়ক মারধর করা হল আইনজীবীকে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মারধরে গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালের মধ্যেই পড়েছিলেন আইনজীবী। কিন্তু, তারপরও চিকিৎসা করা হল আইনজীবীর। ঘণ্টার পর পর ঘন্টা সেভাবেই হাসপাতাল চত্বরে পড়ে থাকলেন তিনি। এমন ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় সমালোচনায় সরব হয়েছে আইনজীবী মহল। আক্রান্ত আইনজীবীর নাম অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের খাবারে কেঁচো পাওয়ার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে আইনজীবীর বাবা-মায়ের। তারপর থেকেই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তিনি জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। তার বাড়ি হল জলপাইগুড়ির মহামায়া পাড়া এলাকায়। মানসিক সমস্যার চিকিৎসার জন্যই তিনি সোমবার গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু, সোমবার রাতে চিকিৎসা করাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।
অভিযোগ, তাঁর আচরণ দেখে সন্দেহ হয় বেশ কয়েকজনের। এরপরে হাসপাতালে চত্বরে থাকা কিছু মানুষ তারওপর চড়াও হয়। তারা আইনজীবীকে মারধর করে। এমনকী আইনজীবীর কাছে যে সমস্ত টাকা ছিল সেগুলিও ছিনিয়ে নেয় তারা। তারপর রক্তাক্ত অবস্থায় তারা অর্ককে সেখানে ফেলে রেখে চলে যায়। এদিকে, হাসপাতালে রাতভর তিনি সেই অবস্থাতেই পড়ে থাকেন। রোগীর চিকিৎসায় এগিয়ে আসেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপুল রায় বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে ফোন করেন। পরে পুলিশ গিয়ে আইনজীবীকে উদ্ধার করে ভর্তি করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
আইনজীবীকে মারধরের ঘটনায় সমালোচনায় সরব হয়েছে আইনজীবী মহল। এই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে জলপাইগুড়ির বার অ্যাসোসিয়েশন। অন্যদিকে, এ বিষয়ে জলপাইগুড়ির বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান চিকিৎসক প্রদীপ কুমার বর্মা জানান এর তদন্ত করা হবে। তারজন্য মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ছেলে ধরা সন্দেহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নিরীহ মানুষকে মারধরের অভিযোগ সামনে আসছে। তার মধ্যে এবার চুরির অভিযোগে মারধর করা হল এক আইনজীবীকে।