সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ, সূতি এবং জঙ্গিপুর এলাকা জুড়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়। সেখানে হিংসার জেরে বাড়িঘর, বাজারহাট থেকে শুরু করে দোকানপাঠ এবং মানুষের উপর হামলা নামিয়ে আনা হয়েছিল। বহিরাগত কিছু আততায়ী তা করেছে বলে গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে এসেছে। তার জেরে জীবন হারানোর ভয়ে, আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়ে যান মানুষজন। সব ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। তারপর সেখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশ নেমে হিংসার জবাব দেয়। ততক্ষণে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আধা সেনাও নেমে পড়ে। আর যৌথভাবে অ্যাকশনে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের পথে আনা হয়। এবার সেখানে মহিলা কমিশন এসে হাজির হয়েছেন। যা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তোপ দেগেছে।
এই মহিলা কমিশনের কাছে গ্রামের কিছু মহিলা যাঁরা ওই হিংসা, অশান্তি দেখেছিলেন তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন। বিএসএফ’কে এখানে রেখে দেওয়ার দাবি করেন তাঁরা। এই আবহে মহিলা কমিশনের সদস্যরা গ্রামের মহিলাদের সাদা কাগজে সই করিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে সরাসরি দায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেশখালিতেও এমন করেছিল তারা বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে সব ধরা পড়ে যেতে পালিয়ে যায় বলে শাসকদলের অভিযোগ।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছাত্রদের মদ্যপান করতে শেখাচ্ছে, ভিডিয়ো দেখেই সাসপেন্ড
এদিকে গ্রামের মহিলাদের দাবি শুনে মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা তাঁদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সব রিপোর্ট দেওয়া হবে। বিএসএফ ক্যাম্প যাতে এখানে করা হয় সেই কথাও তাঁরা উল্লেখ করবেন রিপোর্ট। গ্রামের মহিলাদের কমিশনে থাকা প্রতিনিধিরা বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের সব টিম দায়িত্ব নিয়েছে। গোটা দেশ আপনাদের পাশে আছে। চিন্তা করবেন না।’ এই প্লট যে মহিলা কমিশন তৈরি করে এসেছে সেই অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে ফেসবুকে পোস্ট করে সরাসরি রেখা শর্মাকে আক্রমণ করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ফেসবুক পোস্টে লেখে, ‘বিজেপির হয়ে রাজ্যসভার মনোনয়ন পেতে চাইলে এটাই সবচেয়ে সহজ পথ। বাংলায় যাও, রাজ্যসভার টিকিট পাও।’ রেখা শর্মাকে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করে এই কথা লেখা হয়েছে। আর এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘জাতীয় মহিলা কমিশন যখন সন্দেশখালিতে গেলেন তখন থেকেই যাবতীয় কুৎসা, অপপ্রচার শুরু হল। রেখা শর্মাজি এবং তাঁর টিমে যাঁরা ছিলেন তাঁরা কেমনভাবে বঙ্গ–বিরোধী কুৎসা করা যায় দেখালেন। এবার সেটাই মুর্শিদাবাদে করা হচ্ছে। সাদা কাগজে সই করিয়ে অপপ্রচার নিজেদের মতো করে বসিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই মহিলা কমিশন বাংলা ছাড়া অন্য কোথাও জায়গা পান না। যখন মণিপুর জ্বলে, উত্তরপ্রদেশের উন্নাও, হাথরাস ঘটে, মধ্যপ্রদেশ হয় তখন এরা কোথায় থাকে? নিজেদের রাজনৈতিক উন্নতির জন্য এসব করছে। সব ধরা পড়ে গিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশন মানে বিজেপির মহিলা মোর্চার শাখা।’