মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ছায়া সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কমপক্ষে ১০ জন প্রসূতি। অভিযোগ উঠেছে, অস্ত্রোপচারের পর ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক ইনজেকশন দেওয়ার পরে বছর ৩৫-এর প্রসূতির মৃত্যু হয়। এছাড়াও বাকিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। যদিও তাঁদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিল যে হাসপাতালের তরফেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে হাসপাতালের সুপার তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি ইনজেকশনের কারণে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: নার্সিংহোমে সিজার করান! রোগীকে ‘পরামর্শ’ পুর হাসপাতালের চিকিৎসক, করা হল শোকজ
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা নিমতার মিলনগড়ের বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। তবে পম্পা যে হাসপাতালে কাজ করতেন, লজ্জায় সেখানে প্রসব করতে চাননি। তাই তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৭ এপ্রিল রাতে তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সন্তান প্রসবের পরেও যন্ত্রণা কিছুতেই কম ছিল না। এরপর তাঁকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। শেষে মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। সূত্রের খবর, পম্পার মৃত্যুর শংসাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পম্পার পরিবারের অভিযোগ, ইনজেকশন দেওয়ার পর আরও বেশ কয়েকজন প্রসূতির অবস্থার অবনতি হয়। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ জন প্রসূতির অবস্থা খারাপ ছিল। জানা যায়, এই ঘটনার পরেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে সচিব পর্যায়ের এক আধিকারিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি ওই ব্যাচের ইনজেকশনগুলি সরিয়ে রাখার নির্দেশ দেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, হাসপাতাল সুপার সুজয় মিস্ত্রি দাবি করেছেন, ইনজেকশন দেওয়ার পর প্রসূতিদের অবনতি হওয়ার কোনও খবর নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তদন্ত কমিটি গঠনেরও কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাছাড়া রোগী পরিবারের তরফেও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন। তবে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় উচ্চ-পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে অন্য মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ-সহ পাঁচজনকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিনা, তাই নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।