পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। যদিও এটি পড়ার এখনও সময় হয়নি বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ এখনও পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়নি। মহালয়ার দিনে শেষ হবে পিতৃপক্ষ। পর দিন থেকে শুরু হবে দেবীপক্ষ। আর সেই সময়েই পুজোর উদ্বোধন হওয়ার কথা। কিন্তু অনেকেই পুজোর উদ্বোধন করে ফেলেছেন এর মাঝে। কী যুক্তি তাঁদের?
সম্প্রতি এক বারোয়ারি পুজোর উদ্যোক্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, শাস্ত্রমতে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি থেকে দেবী পূজা শুরু করা হয়। তাই পিতৃপক্ষে মণ্ডপ উদ্বোধনে কোনও বাধা নেই। এ প্রসঙ্গে কী বলছেন, জ্যোতিষশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ মনোজিৎ দে সরকার?
তাঁর মতে, ‘পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের মাঝামাঝি সময়ে অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কোন সময়ে কোন পুজো কীভাবে করতে হবে, তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। অনেকেই বলছেন, এই সময়ে পুজোর উদ্বোধন করা যাবে না। কেউ আবার বলছেন, তাতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে?’
(আরও পড়ুন: মহালয়ার পর শারদীয়া নবরাত্রিতে ঘরে কোন গাছ, ফুল রাখলে সৌভাগ্য উপচে পড়বে? রইল বাস্তু টিপস)
মনোজিৎবাবুর কথায়, জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে এখন অনেকগুলি গ্রহ রেট্রোগ্রেডে রয়েছে। তার মধ্যে শনি, বৃহস্পতি, রাহু এবং কেতু একসঙ্গে নেগেটিভ ফল দিচ্ছে। যার জন্য অনেকেই নিয়মকানুন বুঝতে পারছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘শাস্ত্র মতে যাঁরা বারোয়ারি পুজো করছেন, তাঁদের অনুরোধ করব, তিনটি পঞ্চমুখী জবা, লাল সিঁদুর এবং আলতা একত্রে কালীমন্দিরে অর্পন করে আপনারা পুজো শুরু করতে পারেন। এছাড়া সরষের তেল এবং সিঁদুর আপনারা একত্রে দেবী ছিন্নমস্তার কাছে অর্পন করুন। যাঁদের মঙ্গল নীচস্থ, তাঁরা একটি নীল আকন্দ, এবং দু’টি হলুদ জবা একত্রিত করে দেবী ছিন্নমস্তাকে অর্পন করতে পারেন।’
(আরও পড়ুন: শুক্রবার ১৩ অক্টোবরে রাতে পড়ছে অমাবস্যা! ভুলেও কিনছেন না তো এগুলি?)
যাঁরা বাড়িতে পুজো করছেন, তাঁদের জন্য মনোজিৎবাবুর পরামর্শ, ‘তিনটি ধুতরো ফুল এবং ঘি দ্বারা মহাদেবের আরাধনা করে পুজো সম্পন্ন করে তার পরে দুর্গাপুজো শুরু করতে পারেন। নেগেটিভ এনার্জি দূর করে সুষ্ঠু ভাবে বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করলে কোনও অসুবিধা নেই। এছাড়াও সিদ্ধিদাতা গণেশের একটি মূর্তি বাড়ির উত্তর দিকে রাখুন। প্রতি দিন যে সময়ে পুজো করেন, সেই সময়ে বৈদিক মন্ত্র সহযোগে গণেশের পুজো করুন। লাড্ডু এবং মোদক দিতে ভুলবেন না। ব্রহ্ম মুহূর্তে বৈদিক মন্ত্র জপ করার সময়ে ১০৮ বার জপ করতে হবে। তাহলে এই সময়ের নেগেটিভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাবেন।’
মনোজিৎবাবুর কথায়, পিতৃপক্ষে পুজো শুরু করতে কোনও অসুবিধা নেই। তা সে বাড়ির পুজোই হোক, কিংবা বারোয়ারি। শুধু পেশাদার কোনও জ্যোতিষী বা ঠাকুরমশাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলেই হল। তিনিই বিধান দেখিয়ে দিতে পারবেন।