বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা ম্যালওয়্যার আক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভারতীয়রা। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাতেও ভারতের তুলনায় ম্যালওয়্যার বিপত্তি কম। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ২০ বিলিয়ন মোবাইল লেনদেন এবং সাইবার হুমকির ডেটা থেকেই এই তথ্য সামনে এসেছে।
ম্যালওয়্যার আক্রমণ কী
জেডস্কেলারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিশ্বজুড়ে ম্যালওয়্যার আক্রমণের ২৮ শতাংশ ঘটেছে ভারতে। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৭.৩ শতাংশ এবং কানাডায় ১৫.৯ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে। প্রায়শই মাল্টিফ্যাক্টর প্রমাণীকরণ (MFA) এর মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলিকে বাইপাস করে, ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে নকল লগইন পেজ ব্যবহার করে ম্যালওয়্যার আক্রমণ করা হয়।
প্রতিবেদনটি আরও হাইলাইট করেছে যে মোবাইল ম্যালওয়্যার আক্রমণ, বিশেষ করে ট্রোজানের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে৷ ট্রোজান হল এমনই এক ম্যালওয়্যার, যা ব্যবহারকারীদের ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার ডাউনলোড করতে উৎসাহ দেয়। ব্যবহারকারীর অজান্তেই তাঁরা ফাঁদে পড়ে যান।
আরও পড়ুন: (Apple Watch: অ্যাপল ওয়াচে সহজেই মাপা যাবে রক্তচাপ, নতুন ওয়াচ সিরিজ ১০-এ ধামাকা ফিচার আনছে অ্যাপল)
ঝুঁকিতে রয়েছে আর্থিক খাত
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আর্থিক খাত একেবারেই সুরক্ষিত নেই। ব্যাঙ্কিং ম্যালওয়্যার আক্রমণ ২৯ শতাংশ এবং মোবাইল স্পাইওয়্যার আক্রমণ ১১১ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে আর্থিক খাত বিশেষত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মতো ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলি ফিশিং স্ক্যামের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। এক্ষেত্রে আক্রমণকারীরা গ্রাহকদের সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিতে জাল ব্যাঙ্কিং ওয়েবসাইট তৈরি করে নিচ্ছে৷
সাইবার অপরাধীরা বিশ্বাসযোগ্য দেখতে এসএমএস পাঠিয়েও মোবাইল ব্যবহারকারীদের বিপাকে ফেলছে। এসএমএস পাঠিয়ে, তাঁদের জাল ওয়েবসাইটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ চাওয়া হচ্ছে। এই স্ক্যামগুলি প্রায়শই ডেলিভারি না হওয়া প্যাকেজ, বা অনলাইন অর্ডার করে ডেলিভারি না পাওয়ার মতো পরিস্থিতি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস অর্জন করে বিপাকে ফেলছে।
পুরনো সিস্টেম এবং অরক্ষিত ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এবং অপারেশনাল টেকনোলজি (OT) নেটওয়ার্কগুলি ক্রমশ হ্যাকারদের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই, প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে হাইলাইট করেছে। জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রেও সুরক্ষা বর্ম হারিয়ে ফেলছে গুগল প্লে স্টোরও। প্লে স্টোরে এখন ২০০টিরও বেশি ক্ষতিকারক অ্যাপ পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: (Satcom Security Norms: ইলন মাস্কের সংস্থাকে সুবিধা করে দিতে নিরাপত্তা বিধি শিথিল করবে ভারত? দাবি রিপোর্টে)
প্রসঙ্গত, এত কিছুর পরেও স্বস্তির বিষয় একটাই যে ম্যালওয়ার আক্রমণের ক্ষেত্রে আগের থেকে একটু হলেও বিপত্তি ঠেকিয়েছে ভারত। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে আক্রমণের তালিকায় পঞ্চম থেকে সপ্তমে নেমে এসেছে।